Advertisement
Advertisement

মায়ের ‘প্রেতাত্মা’ থেকে বাঁচাতে নবজাতকের ঠাঁই জালের ভিতরে!

“এর ফলে কুনজর লাগবে না৷ দোষ লাগবে না৷ খারাপ হাওয়া লাগবে না৷”

To Save A Child From Mother's Ghost, People Put Him Into Fishing Net
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 3, 2016 1:50 pm
  • Updated:July 3, 2016 1:50 pm  

দেবব্রত মণ্ডল: সদ্যোজাতের স্থান মাছ ধরার জালের অভ্যন্তরে! দু’দিনের নবজাতককে ঢুকিয়ে রাখা হচ্ছে সেখানে!
ভূত-প্রেতের হাত থেকে বাঁচাতে ও শয়তানের দোষ কাটাতে এমন ‘দাওয়াই’৷ দু’হাজার সালের পর দেড় দশক পেরিয়েও এমন অন্ধবিশ্বাস! জালের চারদিকে ছেটানো হচ্ছে ‘মন্ত্রঃপূত’ জল৷ শিশুকে দেওয়া হয়েছে মাদুলি৷ মাখানো হচ্ছে ‘মন্ত্রঃপূত’ মাটি৷
এটা ক্যানিং থানার হাটপুকুরিয়া গ্রামের গল্প৷ বাস্তব কাহিনি৷ হাটপুকুরিয়া, দাঁড়িয়া, ভলেয়ার গ্রামেই চলে আসছে এই ‘প্রথা’৷ গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, একজন মহিলা ভাঙাঘরের মধ্যে নবজাতককে নিয়ে বসে রয়েছেন৷ বর্ষায় স্যাঁতসেঁতে হয়ে গিয়েছে ঘরের মাটির মেঝে৷ সেখানেই বসে বাচ্চাকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি৷
জালের মধ্যে কেন নবজাতক?
আলিমা সরদার যা জানালেন, তাতে এই সময়কে ধরা যাবে না৷ তিনি বললেন, “বাচ্চাটির মা প্রসব করার সময় মারা যান৷ তার পর থেকে ওকে জালের মধ্যে ঘিরে রাখা হয়েছে৷ যাতে ওর মা ওকে নিয়ে যেতে না পারে৷ ভূত-প্রেত কত রয়েছে৷ শয়তানের ছোঁয়াও ওর গায়ে লাগবে না৷” গ্রামের টানে একশ্বাসে কথাগুলি বললেন আলিমা৷
বৃহস্পতিবার রাতেই ওই সন্তান প্রসব করতে গিয়ে বাড়িতে মারা যান নার্গিস বিবি৷ তার পর থেকে বাড়ির মানুষের ও পাড়া প্রতিবেশির ধারণা হয়, ওর মা পেত্নির রূপ ধরে নিজের সন্তানকে নিয়ে যাবে৷ সেই ধারণা থেকেই সন্তানকে বাঁচাতে এমন ‘ব্যবস্থা’৷ গ্রামের এক প্রবীণ মানুষও সেই ‘ব্যবস্থা’য় সায় দিলেন৷ বললেন, “এর ফলে কুনজর লাগবে না৷ দোষ লাগবে না৷ খারাপ হাওয়া লাগবে না৷”
তবে জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ ডাঃ তরুণ রায় এ ব্যাপারে কড়া মনোভাব দেখিয়েছেন৷ তিনি বলেন, “এটা একেবারে ঠিক নয়৷ এইভাবে নবজাতককে রাখলে জীবাণুর আক্রমণে মৃত্যু হতে পারে৷” যে কোনও সাধারণ চিকিৎসকও সেটাই বলবেন৷ কিন্তু ওই গ্রামের মানুষের কুসংস্কার দূর করার জন্য সচেতনতাকেই জোর দিতে চেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷ বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী বিভিন্ন সংগঠন অন্ধবিশ্বাসকে দূর করে চেতনার প্রসার ঘটাতে চেয়েছে৷ দ্রুত যে চেতনার উন্মেষ ঘটানোর দরকার, তা স্বীকার করবেন যে কোনও সাধারণ মানুষও৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement