সুমিত বিশ্বাস,পুরুলিয়া: কালোবাজারি-সহ খাদ্য সংকট দূর করতে জেলাজুড়ে সাপ্লাই চেনের ম্যাপ তৈরি করছে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। একেবারে পরিবেশক থেকে পাইকারি ও খুচরো বিক্রেতাদের নাম, মোবাইল নম্বর সমেত কোন পাইকারি বিক্রেতার কাছ থেকে পণ্য কোথায় যায়, তার মানচিত্র তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দেশ জুড়ে লকডাউনের জেরে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া প্রান্তিক পুরুলিয়াতে সবজি-সহ মুদিখানার জিনিসপত্রের দাম প্রায় আকাশছোঁয়া। এই খবর পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কানে পৌঁছতেই গত বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে চেম্বার অফ ট্রেড ইন্ড্রাস্ট্রির সঙ্গে বৈঠক করেন। এই চেম্বার অফ ট্রেড ইন্ড্রাস্ট্রির অধীনেই রয়েছেন পাইকারি বিক্রেতারা। জেলাশাসক তাঁদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এখন ব্যবসা করার সময় নয়। অত্যন্ত কঠিন সময়। তাই কালোবাজারি তো দূর অস্ত, কোনও জিনিসপত্রের দাম এক টাকাও বেশি নেওয়া যাবে না।
ব্যবসায়ীদের ওই সংগঠন পালটা জানায়, পণ্য তোলা এবং খালাসের ক্ষেত্রে দিনমজুরের সমস্যা ও গাড়ি বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকাতেই দাম খানিকটা চড়েছে। সংগঠনের কাছ থেকে এই কথা শোনার পর জেলাশাসক আশ্বাস দেন, এই সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে দেবেন। কোন এলাকায় গাড়ি আটকে আছে, তার সমস্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য জেলা প্রশাসনের তরফে চাওয়া হয়েছে। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, “জেলার সাপ্লাই চেন নিয়ে আমরা একটা ম্যাপ তৈরি করছি। যাতে কোনওভাবেই কোনও সমস্যা না হয়।”
এই সমস্যার সমাধানে বিডিও এবং ওসিদের একযোগে পথে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিইবি–র অভিযানও আরও জোরদার করতে হবে বলে জানিয়েছেন। যদিও পুরুলিয়া শহরে ডিইবি কয়েকদিন ধরেই বাজারে আচমকা হানা দিচ্ছে। তবুও বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম সেভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না। ফলে পুলিশ দরিদ্র মানুষজনকে শুক্রবার রেশন বিলি করে। পারা থানা, আনাড়া ফাঁড়িতে চলে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ। রঘুনাথপুর থানার পুলিশও বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার প্যাকেটে করে দিয়ে আসে। পারা থানার পুলিশ এদিন উদয়পুর গ্রামে কয়েকটি যাযাবর পরিবারকে খিচুড়ি খাওয়ায়। তবে এই বিলি বন্টন যাতে নিরাপদ দূরত্বে রেখে হয় সেই বিষয়ে এদিন দিনভর পুলিশ টহল দেয় গোটা জেলায়।
ছবি: অমিত সিং দেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.