ছবি: প্রতীকী
স্টাফ রিপোর্টার: স্কুলে কেন্দ্রীয়ভাবে অশিক্ষক কর্মী নিয়োগে দ্রুত পৃথক কমিশন গড়তে চলেছে রাজ্য সরকার৷ যদিও বিষয়টি এখনও চিন্তাভাবনার স্তরে রয়েছে বলে সোমবার বিধানসভায় জানান শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, রাজ্যের স্কুলগুলিতে কত অশিক্ষক কর্মীপদ ফাঁকা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ ডিআইদের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে৷ তাঁর কথায়, নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যেই নয়া কমিশন গড়ার ভাবনা সরকারের৷ ইতিমধ্যে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে দফায় দফায় বৈঠক শুরু করেছে স্কুলশিক্ষা দফতর৷ বিকাশ ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, আইনসঙ্গতভাবে এই কমিশন গঠন করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য আইন দফতরে খসড়া রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে৷
শীঘ্রই রাজ্যে পার্শ্বশিক্ষকদের প্রশিক্ষণপর্ব শুরু হবে বলেও এদিন ঘোষণা করেন শিক্ষামন্ত্রী৷ তিনি বলেন, রাজ্যে মোট ৬৮ হাজার পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন৷ তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কলেজ বাছা হয়েছে৷ ওই শিক্ষকরা যাতে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পান সে কারণেই এমন সিদ্ধান্ত৷ মন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যের স্কুলগুলিতে বহু জায়গায় ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত সঠিক নেই৷ বহু স্কুলে শিক্ষকরা ঠিকমতো পড়ান না৷ সমস্ত কিছুর পরিসংখ্যান রিপোর্ট আকারে চেয়ে পাঠানো হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, আগে স্কুল পরিচালন সমিতিগুলিই কর্মী নিয়োগের কাজ করত৷ এর পর ২০০৯ সালে শেষ নিয়োগের সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলি কর্মীর্ নিয়োগে জোন ভিত্তিক পৃথক প্যানেল প্রকাশ করে কর্মী নিয়োগ করে৷ কিন্তু এবার থেকে আর স্কুল সার্ভিস কমিশনের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলি নয়৷ ইন্টারভিউ নিয়ে সরাসরি প্যানেল তৈরি করে কেন্দ্রীয়ভাবে অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ করবে নয়া কমিশন৷ কাউন্সেলিংও হবে কেন্দ্রীয়ভাবেই৷ রাজ্যের স্কুলগুলিতে বেশ কয়েক ধরনের অশিক্ষক কর্মী রয়েছেন৷ যথা-গ্রন্থাগারিক, করণিক, ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী৷ ২০০৯ সালের জুলাই মাসে নতুন নিয়োগনীতি তৈরি করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের হাতে কর্মী নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল৷ এই নিয়মের ভিত্তিতে ২০১০ সালে প্রথম শিক্ষাকর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কমিশন৷ পরীক্ষা নেয় তৎকালীন বাম সরকার৷ সেক্ষেত্রে পাঁচটি জোনে আঞ্চলিক কার্যালয়গুলি পৃথকভাবে ইন্টারভিউ নিয়ে প্যানেল তৈরি করে কমিশনে পাঠানোর কথা ছিল৷ কিন্তু লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই রাজ্যে সরকার বদল হয়৷ বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে ইন্টারভিউ নিয়ে জোনভিত্তিক ফল প্রকাশ করে৷
শিক্ষামন্ত্রীর এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শিক্ষা ও রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে৷ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির কলকাতা জেলা সম্পাদক স্বপন মণ্ডল মনে করছেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমেই কর্মী নিয়োগ করা ভাল ছিল৷ এক্ষেত্রে নতুনভাবে কমিশন তৈরি অশিক্ষক কর্মী নিয়োগপ্রক্রিয়া আরও দীর্ঘায়িত হবে৷ ২০১২ সালে শেষ এ রাজ্যে অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ হয়েছিল৷ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়ার কথায়, “সব জায়গায় বিকেন্দ্রীকরণ হচ্ছে৷ আর এখানে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হচ্ছে৷ অথচ এরাই আবার শিক্ষাক্ষেত্রে ‘অনিলায়ন’ নিয়ে প্রশ্ন তোলে৷” বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত বিল এলে এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.