বাবুল হক, মালদহ: স্কুলে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে অভিনব দাওয়াই কর্তৃপক্ষের। কোপ পড়ল পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে। জানা গিয়েছে, সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস করবে ছাত্ররা। বাকি তিন দিন ক্লাস করবে ছাত্রীরা। এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালদহের হবিবপুরের বুলবুলচন্ডী গিরিজা সুন্দরী বিদ্যাপীঠ কর্তৃপক্ষ। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ইভটিজিং-সহ যাবতীয় উপদ্রব ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত। ইতিমধ্যেই নতুন নিয়মে পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে ওই স্কুলে।
জানা গিয়েছে, চলতি মাসে বেশ কয়েকটি আপত্তিকর ঘটনা ঘটেছে হবিবপুরের গিরিজা সুন্দরী বিদ্যাপীঠ চত্বরে। স্কুল ক্যাম্পাস এমনকী ক্লাসরুমেও নজরে পড়েছে বহিরাগত ছাত্র। ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। কিন্তু বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করেও বহিরাগতদের প্রবেশ আটকানো যায়নি। কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ঝামেলা থেকে অব্যহতি পেতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদাভাবে ক্লাস করানোর। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। সেই নিয়ম মেনে ক্লাসও শুরু হয়েছে।
তবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই জেলার শিক্ষাদপ্তর থেকে শুরু করে শিক্ষা মহলেও শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার মালদহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, “ছাত্ররা সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস করবে, তিন দিন ছুটি কাটাবে। এই ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে না স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে স্কুলের তরফে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। তবে আমি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।” মালদহ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, হবিবপুরের গিরিজা সুন্দরী বিদ্যাপীঠে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শুধুমাত্র ছাত্রদের জন্য। ছাত্রীদের জন্য বালিকা বিদ্যালয় রয়েছে। শুধুমাত্র একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতেই কো-এড সিস্টেম রয়েছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ পাণ্ডে বলেন, “জায়গার দোহাই দিয়ে জেলার বহু স্কুলে তিন দিন করে ক্লাস হচ্ছে। শিক্ষাদপ্তর সেক্ষেত্রে কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? আমরা ইভটিজিং রুখতে আপাতত অস্থায়ীভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরাও এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। অভিভাবক মহল থেকেও কোনও অভিযোগ আসেনি। ফলে এই সিদ্ধান্ত আপাতত বহাল থাকবে।” তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের মালদহ দক্ষিণের আহ্বায়ক উত্তীয় পাণ্ডে বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে কি না, সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। তবে স্কুলের পরিবেশ সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে শিক্ষকরা সব রকম ভাবে চেষ্টা চালাতে পারেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.