শেখর চন্দ্র, আসানসোল: চিটফান্ড মামলায় সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়ার পর প্রথমবার মুখ খুললেন হালিশহরের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা রাজু সাহানি। তাঁর দাবি, “চিটফান্ডের সঙ্গে যুক্ত নই, শীঘ্রই বুঝতে পারবেন।” আসানসোল ফৌজদারি আদালতের নির্দেশে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতে রাজু। আগামী ৮ আগস্ট ফের আদালতে তোলা হবে তাঁকে।
শুক্রবার বাড়ি থেকে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা, আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ উদ্ধারের পর রাজু সাহানিকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। রাতেই তাঁকে কলকাতায় নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয়। এরপর শনিবার ভোরে সেখান থেকে বের করা হয় রাজুকে (Raju Sahani)। তৃণমূল নেতাকে সঙ্গে নিয়ে আসানসোল ফৌজদারি আদালতের উদ্দেশে রওনা দেন আধিকারিকরা। তার আগে অবশ্য গাড়িতে ওঠার সময় রাজু দাবি করেন, “চিটফান্ডের সঙ্গে আমি যুক্ত নই। শীঘ্রই আপনারা সব বুঝতে পারবেন।” নগদ টাকা, আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনাকে ‘ভুল’ বলেও দাবি করেন রাজু। এরপর বেলা বারোটা নাগাদ আদালতে তোলা হয় হালিশহর পুরসভার চেয়ারম্যানকে। সওয়াল জবাব শেষে ৫ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
অংশুমান রায় দায়িত্ব ছাড়ার পর হালিশহর (Halisahar) পুরসভার মুখ্য প্রশাসক হন রাজু। এবার পুরভোটের পর চেয়ারম্যান হন। তার আগে থেকেই অবশ্য সিবিআই চিটফান্ড মামলায় রাজু সাহানির উপর নজরদারি চালাচ্ছিল বলেই খবর। বর্ধমান সন্মার্গ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন নামে ওই চিটফান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ দায়ের হয় ২০১৪ সালে। কুলটি থানায় অভিযোগ জমা পড়েছিল। কোটি কোটি টাকা তছরূপের ঘটনায় ২০১৮ সালে সিবিআই তদন্ত শুরু করে। চার্জশিটও জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। গত বছর ১২ ডিসেম্বর তৃণমূল নেতা তথা বর্ধমান পুরসভার পুরপ্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় গ্রেপ্তারও হন। যদিও বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত। এই মামলাতেই এবার সিবিআইয়ের জালে রাজু।
দাপুটে সিপিএম নেতা তথা কাউন্সিলর লক্ষ্মণ সাহানির ছেলে রাজু। হালিশহরের লালকুঠিতে তাঁর পৈতৃক বাড়ি। লোহার ছাঁট এবং পাটের ব্যবসা করতেন। তবে মাত্র কয়েক বছরেই নাকি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যান রাজু। হালিশহরে গঙ্গার ধারে হাইনেস্ট গেস্ট হাউস, নিউটাউনে ফ্ল্যাট এবং সিটি সেন্টারের কাছে বাড়িও রয়েছে। তাঁর বাড়ি থেকে সিবিআই ৮০ লক্ষ টাকা, ২.৭৫ কোটি টাকার সম্পত্তির ডিড, থাইল্যান্ডে থাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে। এদিকে, রাজুর পদত্যাগের দাবিতে হালিশহর পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় তাঁদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.