সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরোহিতদের সম্মেলন থেকে নাম না করে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার বোলপুরে পুরোহিতদের সম্মেলনে অনুব্রত বলেন, ‘আমি ভুল করলে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু কারও কাছে হিন্দুত্ব শিখব না। প্রয়োজনে আপনাদের কাছে শিখব।’
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘পুরোহিত সম্মেলন কি বিজেপিই করবে?’ রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে সব ধর্ম-জাতি-পেশার মানুষকে পাশে পেতে চাইছে জোড়াফুল শিবির। এলাকায় এলাকায় নিবিড় জনসংযোগই ঘাসফুল নেতাদের লক্ষ্য। এদিনের সম্মেলনে তুলে ধরা হয় দলের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম। ‘এই সরকার সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করে৷ জাতপাতের রাজনীতিতে নয়৷’ অনুব্রতর পুরোহিত সম্মেলনের প্রসঙ্গে বলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
এদিন ডাকবাংলো মাঠে পুরোহিত সম্মেলনের আয়োজন করেন অনুব্রত। সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন জেলার বহু পুরোহিত। অনুষ্ঠানের শেষে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন ছিল। রাজনৈতিক মহলের দাবি, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এদিনের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্প্রতি বীরভূমের কংগ্রেস নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে পুরোহিতদের ভাতা দেওয়ার জন্য আবেদন জানায়। ইমামদের মতো পুরোহিতরাও ভাতা পাওয়ার অধিকারী বলে দাবি করে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, চিঠি পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে ভাবনাচিন্তাও শুরু করেন। ফলে পুরোহিতদের একাংশ তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে। এই প্রবণতা রুখতেই আজ ডাকবাংলো মাঠে পুরোহিত সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল নেতৃত্ব। অন্তত রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য তেমনই।
আজ বীরভূমের বোলপুরে ডাকবাংলো মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এই পুরোহিত সম্মেলন। প্রায় ৩ হাজার পুরোহিতদের নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল এই সম্মেলনের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা-সহ জেলার অন্যান্য বিধায়করা। জেলার এগারোটি বিধানসভা-সহ কেতুগ্রাম, আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট, সবমিলিয়ে মোট ১৪টি বিধানসভার প্রায় ৩ হাজার পুরোহিতদের নিয়ে আজ তৃণমূলের পুরোহিত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ইতিহাসে এই প্রথম পুরোহিত সম্মেলন করছেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল।
এদিনের সভা থেকেই নাম না করে গেরুয়া শিবিরকে জোরাল আক্রমণ করেন অনুব্রত। মুকুল রায়কেও তীব্র তাচ্ছিল্য করেন বীরভূম জেলা সভাপতি। বলেন, ‘আমার বাড়িতে ৪০০ বছরের দুর্গাপুজো হয়। ৪টে শিবমন্দির রয়েছে আমাদের। আমি জানি হিন্দুত্ব কী। কাওকে শেখাতে হবে না।’ এর আগেও বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল বলে তোপ দেগেছেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি। রাজস্থানে বাংলার এক শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় কাঠগড়ায় তুলেছিলেন বিজেপির উগ্র হিন্দুত্ববাদকে। দাবি করেন, তাঁর জেলায় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি অটুট রয়েছে। তারাপীঠে বহু মুসলিম পুজো দিতে যান, তিনি নিজে চাদর চড়াতে যান দাতাবার মাজারে। তাঁর অভিযোগ, দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসার বিষ ছড়াতে চাইছে বিজেপি। মানুষকে একজোট হয়ে বিজেপির এই কৌশল রুখে দিতে হবে বলে আহ্বান জানান তিনি। বিজেপির বিরুদ্ধে চড়া সুর এদিনের সম্মেলনেও ধরে রাখলেন তৃণমূলনেত্রীর স্নেহধন্য ‘কেষ্টা’।
মুকুল প্রসঙ্গে বিস্ফোরক অনুব্রত! কী বললেন, দেখে নিন ভিডিওতে:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.