দেবাদৃতা মণ্ডল, চুঁচুড়া: ৭০তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানকে ঘিরে মঙ্গলবার ধুন্ধুমার কাণ্ড হুগলি উইমেনস কলেজে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থক ওই কলেজের যুব নেত্রীদের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠান বন্ধ করার অভিযোগে কলেজের সামনের রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখালেন কলেজের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা৷ তাঁদের বিরুদ্ধেও মারধরের অভিযোগে সরব হলেন ছাত্র নেত্রীরা৷ ঘটনাস্থলে আসে চুঁচুড়া থানার পুলিশ৷ দু’পক্ষকে বুঝিয়ে তারাই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন৷ কিন্তু কোনওভাবেই আপস করতে রাজি হন না অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা৷ সূত্রের খবর, এদিন সন্ধ্যা ছ’টার কিছু বেশি সময় পর্যন্ত সেখানে বসে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এই ঘটনার অভিযোগ জানাতে উচ্চতর কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা৷
[টিকিট কেটে ট্রেনে চড়ার বার্তা বাউল শিল্পীর, কিন্তু কেন?]
ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন ৭০তম বর্ষপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠান উপলক্ষে কলেজে একে একে পড়ুয়াদের ভিড় জমতে থাকে৷ অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের অভিযোগ, অনুষ্ঠান শুরুর আগেই সেখানে এসে ঝামেলা শুরু করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা৷ প্রথমে তাঁদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়৷ তারপর দেওয়া হয় শাসানি৷ জানা গিয়েছে, এরপরই কলেজের মধ্যে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন অধ্যাপকরা৷ কলেজের সামনের রাস্তাতে তাঁরা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন এবং সেখানেই কলেজের কৃতিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সন্মাননা৷ এরপরই রাস্তায় বসে বিক্ষোভে শামিল হন অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা৷ তাঁদের অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে গত তিনবছর ধরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কোনও কলেজে ছাত্র সংসদ না থাকলেও, এই কলেজে কার্যত হুজ্জুতি চালান টিএমসিপির মহিলা সদস্যরা৷ কোনও বিষয়ে তাঁদের দাবি না মেনে নিলেই, অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন তাঁরা৷ কলেজের অধ্যক্ষ সীমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজ সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা৷ রোজ রোজ এই অত্যাচার সহ্য করা যায় না৷” ঘটনার অভিযোগ উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি৷
[‘আই লাভ ইউ সুজয়’, শিরা কেটে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখে আত্মঘাতী ছাত্রী]
এই ঘটনায় উসকানি দেওয়ায় এবং দীর্ঘদিন ধরে কলেজে হুজ্জুতি চালানোর ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই নেত্রী সুস্মিতা সেনা ও প্রিয়াঙ্কা অধিকারীর বিরুদ্ধে৷ এদের মধ্যে সুস্মিতা কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। প্রিয়াঙ্কা ওই কলেজের প্রাক্তনী ও বিধায়ক তপন দাশগুপ্তের অনুগামী৷ যদিও অধ্যাপকদের এই অভিযোগ মানতে নারাজ টিএমসিপির সদস্যরা৷ বরং কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মারধরের পালটা অভিযোগ করেছেন তাঁরা৷ ঘটনার বিষয়টি জানলেও, লিখিত অভিযোগ জমা না পড়া পর্যন্ত কিছু বলতে চাইছেন না এসডিও তথা ওই কলেজের প্রশাসক অরিন্দম বিশ্বাস৷ সূত্রের খবর, ঘটনার প্রতিবাদে আগামিকাল, বুধবার থেকে কলেজে পঠনপাঠন বন্ধ রাখতে পারেন অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.