রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ২ পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনের নির্বাচনে এসে তৃণমূল কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়ে ‘চোর’ স্লোগান শুনলেন কাঁথি লোকসভার তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী।
এগরা ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৯ জন ভোট দান করতে পারবেন। উল্লেখ্য, স্থায়ী সমিতিতে ভোটদানের অধিকার থাকে পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী প্রার্থী, এলাকার বিধায়ক ও এলাকার সাংসদদের। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিজেপির পক্ষে রয়েছে ১৯ এবং তৃণমূলের পক্ষে রয়েছে ১৯। দুই দল মিলিয়ে ৩৮টি ভোট হচ্ছে। বাকী ১টি ভোট সাংসদ শিশির অধিকারীর। সাংসদ যেদিকে ভোট দেবেন সেদিকেই হবে পাল্লাভারি। স্থায়ী সমিতির নির্বাচনে শিশির অধিকারীকে যোগ দিতে আসতে দেখে পঞ্চায়েত সমিতির সামনে জড়ো হয়ে থাকা তৃণমূল কর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে ‘চোর’ স্লোগান দিতে থাকেন। ঘটনাটা নজরে আসতেই পুলিশ সেই তৃণমূল কর্মীদের সরিয়ে দেয়।
এদিন পঞ্চায়েত সমিতির সামনে বিজেপির মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে শিশির অধিকারীকে হাঁসি মুখে হাতমেলাতে দেখা যায় যা দেখে জোর স্লোগান তোলেন তৃণমূল কর্মীরা। গাড়ি থেকে নেমেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন সাংসদ। তুলে ধরেন অনুন্নয়নের কথা। কোন দলকে ভোট দেবেন জানতে চাইলে স্পষ্ট করেননি শিশির অধিকারী। উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবেন বলে পঞ্চায়েত সমিতির ভেতরে যান।
এদিকে আশঙ্কা সত্যি করেই বিজেপির পক্ষে ভোট দেন শিশির অধিকারী। বিজেপির পক্ষে ভোট দিয়ে ১৯-১৯ সংখ্যার ইতি ঘটান সাংসদ। বিজেপির সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ২০। ফলে স্থায়ী সমিতি গঠন করে বিজেপি। সভাপতি তৃণমূলের হলেও সবকটি স্থায়ী সমিতি বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে।
পঞ্চায়েত সমিতির মোট স্থায়ী সমিতি ১০টি। অর্থ স্থায়ী সমিতিতে নির্বাচন হয়নি। বাকি ৯টি স্থায়ী সমিতিতে ভোট হয়। কিন্তু শিশির অধিকারী শিশু ও নারী কল্যাণ স্থায়ী সমিতির নির্বাচনে একটি ভোট ভুল দিয়ে ব্যালটেই কেটে দেন। সেই ভুল ব্যালট গ্রহণ করেন বিডিও । তৃণমূলের অভিযোগ, বিডিও বিজেপি কে সহযোগিতা করতে শিশির অধিকারীর ভুল ভোট গ্রহণ করেছেন। তাই কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা এগরার বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতির নেতৃত্বে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। তরুণ মাইতি বলেন, “তৃণমূলের টিকিটে জেতা সাংসদ বিজেপির পক্ষে ভোট দিয়েছে। ফলে বিজেপি স্থায়ী সমিতি গঠন করেছে। তবে উনি একটি ভোট ভুল দিয়ে ব্যালটে কেটে দিয়েছেন। ব্যালটে ভোট দেওয়ার পরে কাটাকাটি করা যায় না। বিডিওকে বিষয়টি জানানোর পরেও উনি তা গ্রহণ করেছেন। তার প্রতিবাদে আমরা অবস্থানে বসেছি। আমরা পুনরায় ওই স্থায়ী সমিতির আসনে ভোট চাই। যতক্ষণ বিডিওর সদুত্তর না পাচ্ছি ততক্ষণ আমাদের অবস্থান চলবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.