সৎকার করতে এগিয়ে আসা তৃণমূল কর্মীরা। ছবি: জয়ন্ত দাস
ধীমান রায়, কাটোয়া: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বিজেপির এক স্থানীয় নেতার। কিন্তু তিনি করোনা (Covid-19) আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, এই ভেবে প্রতিবেশীরা কেউ মরদেহ সৎকারে এগিয়ে আসেননি। শেষে স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল (TMC) কর্মীই ওই বিজেপি (BJP) নেতার মরদেহ সৎকারে এগিয়ে এলেন। ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসার মধ্যে এমনই মানবিক দৃশ্য দেখা গেল পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলার কেতুগ্রাম থানার চাকতা গ্রামে। প্রায় কুড়ি ঘন্টা পর অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায় (৬০) নামে মৃত ওই বিজেপি নেতার দেহ উদ্ধারণপুর শ্মশানে সৎকার করা হয়।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুর নাগাদ চাকতা গ্রামের বাসিন্দা অনুপবাবু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই মারা যান। তিনি ওই গ্রামের বিজেপির বুথ সভাপতি ছিলেন। মৃতের স্ত্রী রীনা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর এলাকায় অনেকেই মনে করেন করোনায় মৃত্যু হয়েছে। আতঙ্কে প্রতিবেশী, আত্মীয়দের কেউ বাড়িতে আসেননি। এমনকি গ্রামের বিজেপির কর্মী সমর্থকদেরও দেখতে পাওয়া যায়নি বাড়িতে। এই অবস্থার মধ্যেই সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। রাত নামে। সারারাত মৃতদেহ আগলে বসে থাকেন রীনাদেবী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে আনখোনা অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বুদুন শেখ ঘটনার কথা জানতে পারেন। তারপর তিনি এলাকার তৃণমূলের কর্মীদের নির্দেশ দেন যাতে মরদেহ সৎকার করা হয়। এরপর এদিন সকালে চাকতা গ্রামের কয়েকজন তৃণমূলকর্মী ওই বিজেপি নেতার বাড়িতে যান। দেহ সৎকারে তৎপর হন তাঁরা। শেষপর্যন্ত উর্ধারণপুর শশ্মানঘাটে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। মৃতের জামাই দেবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের। তিনি বলেন, “এই সহযোগিতা না করলে দেহ সৎকার করাই সম্ভব হত না।” কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ বলেন,” আমাদের দল কতটা মানবিক এটা তারই প্রমাণ।” অন্যদিকে বিজেপির বর্ধমান পূর্ব (গ্রামীণ) জেলা কমিটির সহ সভাপতি অনিল দত্ত বলেন,” ওই গ্রামে আমাদের কর্মীরা ভোটের ফলঘোষণার পর থেকেই গ্রামছাড়া রয়েছেন। তাই তাঁরা যেতে পারেননি। শেষে গ্রামের কয়েকজন যুবক অনুপবাবুর দেহ সৎকারে সাহায্য করেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.