বিক্রম রায়, কোচবিহার: তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ দলের অন্দরের ক্ষোভ ছিলই। জেলা সভাপতি পদ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অপসারিত হতেই কোচবিহারে আনন্দে মাতলেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। দিনহাটা, মাথাভাঙা-সহ একাধিক জায়গায় পুড়ল বাজিও!
জন্মলগ্ন থেকে দলে ছিলেন না। ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। দীর্ঘদিন কোচবিহারে দলের জেলা সভাপতি ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের পর মন্ত্রীও হন। তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরের খবর, রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাপটে কোচবিহারে কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের একাংশ। দলের কর্মসূচিতে আর সেভাবে দেখা যেত না অনেক পুরনো কর্মীকে। কিন্তু, স্রেফ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য হওয়ার সুবাদে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পেতেন না কেউই।
এবারের লোকসভা ভোটে কোচবিহার আসনটি হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। তিনি একসময়ে এ রাজ্যের শাসকদলেরই যুবনেতা ছিলেন। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দলে থাকাকালীন জেলা সভাপতির রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে বনিবনা হত না নিশীথ প্রামাণিকের। তিক্ততা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, পঞ্চায়েত ভোটে বেশ কয়েকটি আসনে নির্দল প্রার্থীদের দাঁড়িয়ে করেছিলেন তৃণমূলেরই প্রাক্তন এই যূবনেতা। নির্দল প্রার্থীরা জিতেও গিয়েছিলেন। এরপরই দল থেকে নিশীথ প্রামাণিককে বহিষ্কার করে তৃণমূল নেতৃত্ব। শেষপর্যন্ত বিজেপি প্রার্থী হিসেবে তাঁর জয়ে সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরেই। এদিকে ফলপ্রকাশের পর জেলার তৃণমূলের পার্টি অফিসগুলি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠে বিজেপি বিরুদ্ধে। দিন কয়েক আগে নিজের নির্বাচনী এলাকা নাটাবাড়িতে পার্টি অফিস পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু।
শুক্রবার কোচবিহারের জেলা সভাপতির পদ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নয়া জেলা সভাপতি হয়েছেন মাথাভাঙার বিধায়ক ও বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। রাতেই দিনহাটা, মাথাভাঙা, সিতাই-সহ কোচবিহারের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তায় বাজি ফাটিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের একাংশ।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.