ছবি: প্রতীকী।
চন্দ্রজিৎ মজুমদার ও বাবুল হক: একই দিনে রাজ্যের দুই জেলায় শুটআউট। মৃত কান্দির গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী গৌরাঙ্গ মণ্ডল। মঙ্গলবার রাতে দলীয় কার্যালয় থেকে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ধৃত ১ অভিযুক্ত। অন্যদিকে, মালদহে গুলিবিদ্ধ অপর এক তৃণমূল কর্মী বিশ্বজিৎ শীল। বর্তমানে মালদহ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন তিনি।
কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের খুন ও বজবজের তৃণমূল কাউন্সিলর মিঠুন টিকাদারকে খুনের চেষ্টার ঘটনার কিছুদিন পর একইদিনে রাজ্যের দুই জেলায় গুলিবিদ্ধ দুই তৃণমূল কর্মী। মৃত একজন। নাম গৌরাঙ্গ মণ্ডল (৩৮)। বাড়ি মুর্শিদাবাদের রুদ্রবাটি গ্রামে। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধে থেকে দোহালিয়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়েই ছিলেন ওই তৃণমূল কর্মী। সেখানে কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক সেরে সাড়ে নটা নাগাদ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। অভিযোগ, সেইসময় রুদ্রপুরের কাছে রাস্তায় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। অভিযোগ, বোমা লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে দুষ্কৃতীরা। গুলি লাগে তাঁর বুকে ও মাথায়। গুলির শব্দে স্থানীয়রা রাস্তায় বেরিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন গৌরাঙ্গ মণ্ডল। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে রুদ্রপুর এলাকায়। কান্দির তৃণমূল কর্মীরা ওই এলাকায় ভিড় জমান। সুখেন পাল , অক্ষয় পাল, শিশির পাল ও অরুণ ঘোষ নামে ৪ জনের বিরুদ্ধে কান্দি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের পরিবার ও দলের কর্মী সমর্থকরা। তৃণমূলের ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাপি সরকার জানিয়েছেন, “গৌরাঙ্গ মণ্ডল তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।” দ্রুত তাঁর খুনে অুভিযক্তদের চিহ্নিত না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নির্দেশে খুন করা হয়েছে গৌরাঙ্গকে। তবে শুধু দলীয় কর্মীই নন, স্থানীয়দের কাছে বেশ জনপ্রিয় মৃত গৌরাঙ্গ মণ্ডল। তাঁদের কথায় বরাবর এলাকার মানুষদের বিপদে পাশে দাঁড়াতেন তিনি। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার স্থানীয়রাও।
পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে বুধবার সকালেই অভিযুক্ত সুখেন পালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতের থেকে বেশ কিছু তথ্যে মিলেছে, যার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যদিও শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী এখনও পলাতক ৩ অভিযুক্ত। বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় কান্দি থানার পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি তাজা বোমা। এখনও থমথমে এলাকা। এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ পিকেট। অন্যদিকে, একই দিনে মালদহে গুলিবিদ্ধ যুব তৃণমূল কর্মী বিশ্বজিৎ শীল। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে মালদহের রবীন্দ্রভবন এলাকায় দলের কয়েকজন কর্মী দাঁড়িয়েছিলেন সেই সময় হঠাৎই গুলি লাগে ওই যুবকের। যুব তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি প্রিয়ার্ঘ সাহা জানিয়েছে, তাঁকে খুনের উদ্দেশ্যেই গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। সেটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে লাগে বিশ্বজিতের। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিশ্বজিৎ। ভোটের আগে জেলায় জেলায় তৃণমূল নেতা কর্মীদের আক্রমণের পিছনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মদত রয়েছে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.