Advertisement
Advertisement

তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচনেও মানুষের আস্থা মমতায়

এরাজ্যে বিরোধীদের হাল এখন পুরোনো ৫০০ ও ১০০০-এর নোটের মতোই৷

TMC win by-election in WestBengal
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 22, 2016 3:21 pm
  • Updated:November 22, 2016 3:22 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ছয় মাস আগে বিধানসভা ভোটে তিনি নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছিলেন৷ ছয় মাসের মধ্যে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা থাকে না৷ কিন্তু সাম্প্রতিক নোট কাণ্ড নিয়ে তাঁর জেহাদ আন্দোলন চলছে৷ খুব স্বাভাবিকভাবেই তিন আসনের উপনির্বাচনে দেখার ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে ফলাফল কেমন হয়৷ কিন্তু সোমবার সকালে ভোটবাক্স খুলতেই বোঝা গেল, মমতার প্রতি এই রাজ্যের মানুষের আস্থা, ভরসা, বিশ্বাস আরও বহু গুণ বেড়েছে৷ এমনকী নোট কাণ্ড নিয়ে তাঁর আন্দোলনেও সমর্থন রয়েছে মানুষের৷ দুই লোকসভা ও একটি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল দিয়ে কী সব কিছু প্রমাণ হয়? হয়৷ একটা ভাত টিপলেই যেমন বোঝা যায়, হাঁড়ির চাল সি হয়েছে কি না, তেমনই তমলুক, কোচবিহার  ও মন্তেশ্বরে তৃণমূলের জয়ের রেকর্ড মার্জিন বুঝিয়ে দিল সবটাই৷ এরাজ্যে বিরোধীদের হাল এখন পুরোনো ৫০০ ও ১০০০-এর নোটের মতোই৷ উপনির্বাচনের ফলের পর বেশ খোশমেজাজেই দিল্লির উড়ানে চড়েছেন মমতা৷ নবান্ন থেকে রাজধানীর উদ্দেশে বের হওয়ার সময় মমতা বলেন, “উপনির্বাচনের রায় হল গণবিদ্রোহ৷ মানুষ নোট বাতিলের বিরু‌দ্ধে ভোট দিয়েছে৷ হিটলারি কায়দায় কেন্দ্রের সরকার চলছে৷ তাই তার বিরু‌দ্ধে এটাই জনগণের রায়৷”

তিন আসনের ফলের আঁচ আগেই ছিল৷ কারণ, এই রাজ্যে বিরোধী শিবির ছন্নছাড়া৷ বিভক্ত বিরোধীরা৷ বিধানসভায় একজোটে লড়লেও কংগ্রেস, সিপিএম কাদা ছোড়াছুড়িতে নেমেছিল উপনির্বাচনে৷ দেখার ছিল, বিজেপির অগ্রগতি কতটা হয়৷ ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, তিন আসনের অনেক ক্ষেত্রেই বিরোধীদের জমানত জব্দ হয়েছে৷ কংগ্রেসকে তো খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না৷ বিধানসভায় বামেদের সঙ্গে জোট বাঁধার পর এই ভোটে সমর্থন আরও কমেছে৷ তমলুকে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে এককাট্টা লড়াইয়ের পর রেকর্ড প্রায় পাঁচ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জিতছেন কাঁথি দক্ষিণের বিধায়ক দিব্যেন্দু৷ কোচবিহারে বাম প্রার্থীকে বহু পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্হানে উঠে এসেছে বিজেপি৷ বর্ধমানের মন্তেশ্বরে সব বিরোধীরই জমানত জব্দ৷ সেখানেও এক লক্ষ ২৭ হাজারের বেশি ভোটে জিতে এবারের বিধানসভায় রেকর্ড ভাঙলেন সৈকত পাঁজা৷

Advertisement

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য জয় তমলুকে৷ শুভেন্দুর ছেড়ে যাওয়া আসনে প্রার্থী ছিলেন দিব্যেন্দু৷ শুভেন্দু এবার নিজেই যেন প্রার্থী ছিলেন৷ মূল দায় ছিল, ভাইকে জেতানোই নয়, বিধানসভায় হেরে যাওয়া তিন আসনে অগ্রগমন৷ ভোট বাক্স খুলতেই দেখা গেল, বাজি জিতেছেন শুভেন্দু৷ মমতার ছবিকে সামনে রেখে হলদিয়া, পাঁশকুড়া পূর্ব ও তমলুকেও বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন দিব্যেন্দু৷ সাত লক্ষ ৭৯ হাজার ভোট পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী৷ সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ২ লক্ষ ৮৩ হাজার৷ ব্যবধান চার লক্ষ ৯৭ হাজার ৫২৮ ভোট৷ যে হলদিয়ায় বিধানসভায় ২১ হাজার মার্জিনে হেরেছিল তৃণমূল, সেখানে এবার এক লক্ষ ৭৪৪ ভোটে জিতেছেন দিব্যেন্দু৷ হেরে যাওয়া তমলুক বিধানসভায় ৪৮৮৩২ এবং পাঁশকুড়া পূর্বে ৪৮৩৫৫ ভোটে জয় পেয়েছে জোড়া ফুল৷ জমি আন্দোলনের অন্যতম গর্ভগৃহ নন্দীগ্রামে সেনাপতি শুভেন্দুর নেতৃত্বে জয়ের ব্যবধান হয়েছে এক লক্ষ ৩৭ হাজার ৩১০৷ রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “সরকারের উন্নয়ন ও নেত্রীর উপর মানুষের আস্থা৷ বিরোধীদের অপপ্রচারকে মানুষ মেনে নেয়নি৷ জননেত্রীর ইতিবাচক কাজের প্রভাব পড়েছে৷ যত এটিএম-এ লাইন বেড়েছে, তত তৃণমূলের ভোট বেড়েছে৷ আমাদের দায়িত্ব আরও বাড়ল৷” আসন্ন্ পুরভোট এবং কাঁথি দক্ষিণে নেত্রীর প্রার্থীদের আরও বিপুল ভোটে জয়ী করার জন্য কাল থেকেই মাঠে নামার কথা ঘোষণা করেন শুভেন্দু৷ সিপিএম তমলুক লোকসভায় দ্বিতীয় স্থান পেলেও বিপুল হারে ভোট কমেছে৷ তৃতীয় হলেও ভোট বেড়েছে বিজেপির৷ কংগ্রেসের জমানত জব্দ৷ জয়ী দিব্যেন্দুর প্রতিক্রিয়া, “নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেব৷ সংসদীয় কেন্দ্রে শুভেন্দু অধিকারীর অসমাপ্ত কাজ দ্রূত শেষ করব৷”

কোচবিহার আসনটি নানা সমীকরণে মিশ্র৷গ্রেটার কোচবিহার আন্দোলন রয়েছে৷ ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রভাব একদম তলানিতে৷ পাশাপাশি রাজবংশী ও ছিটমহলেরও প্রভাব রয়েছে৷ এবার তৃণমূলের প্রতি আস্থা আরও বেড়েছে৷ সব থেকে তাৎপর্য়পূর্ণ, ফরওয়ার্ড ব্লকের দুর্গ নিশ্চিহ্ন৷ দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি৷ জমানত জব্দ হয়েছে বাম প্রার্থীর৷ বোঝাই যাচ্ছে, বামেদের কী করুণ অবস্হা৷ তৃণমূলের পার্থপ্রতিম রায় আড়াই লক্ষ ভোটে এগিয়ে৷

বর্ধমানের মন্তেশ্বরে কোনও রাজনৈতিক দলই জমানত ধরে রাখত পারল না৷ এক লক্ষ ২৭ হাজার ১২৭ ভোটে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের সৈকত পাঁজা৷ একসময়ের সিপিএম ২০১৮৯ ভোট পেয়ে জমানত খুঁইয়েছে৷ মোট ভোটের ছয় ভাগের একভাগও পায়নি কোনও বিরোধী দল৷ বরং ৭৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে তৃণমূল৷ তৃণমূল পেয়েছে ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩১৬ ভোট৷ সিপিএম পেয়েছে ২০১৮৯ ভোট৷ বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ১৬০৭৩৷ কংগ্রেস পেয়েছে ২৮৮৫ ভোট৷ হলদিয়া-সহ তমলুক লোকসভার সাতটি বিধানসভাতেই এগিয়ে তৃণমূল৷ তবে উল্লেখযোগ্যভাবে কোচবিহার লোকসভায় দ্বিতীয় স্হানে বিজেপি৷

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement