ছবি: প্রতীকী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এখনই লোকসভা ভোট হলে বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের আসন বাড়বে। ইন্ডিয়া টুডে’র সাম্প্রতিক জনসমীক্ষায় তৃণমূল ৩৫টি আসনে জিতবে বলে দাবি করা হয়েছে। গতবার বিজেপি পেয়েছিল ১৮টি আসন। এবার তারা ৭ টপকাবে না। বাম ও কংগ্রেস কোনও আসন জিততে পারবে না। গতবার বাম শূন্য হলেও কংগ্রেস ২টি আসনে জিতেছিল। সমীক্ষার পর রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, ইডি-সিবিআই পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করলেও তা ভোটবাক্সে প্রভাব নাও ফেলতে পারে।
মমতার সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পগুলির কারণে তৃণমূলের (TMC) ভোটব্যাংকে ক্ষয় হওয়া দূরের কথা, তা আরও স্ফীত হতে পারে। অন্যদিকে, এই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, বাংলা-সহ সারা দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা প্রতিদিন কমছে। ভোটবাক্সে তার বড়সড় প্রতিফলনও ঘটবে। যদিও আপাতত সমীক্ষায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা এনডিএকে দেওয়া হয়েছে। এই সমীক্ষার পর বিরোধীদের অবশ্য মত, দু’বছরে মোদির জনপ্রিয়তা আরও কমবে। ফলে এনডিএ’র সংখ্যা গরিষ্ঠতার পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
সমীক্ষায় ভোট শতাংশের হিসেব দিয়ে বলা হয়েছে, বাংলায় এই মুহূর্তে যদি লোকসভা ভোট হয় তবে ৪২ আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পাবে ৩৫টি আসন। এনডিএ বা বিজেপি পাবে সাতটি আসন। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করেই এটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছিল যে ২০১৯-এর চাইতে লোকসভা কেন্দ্রগুলিতে বিজেপির ভোট কমেছে। সমীক্ষায় সেটাই উঠে এসেছে। এবং দেখা যাচ্ছে, বিজেপির আসন আরও কমে গিয়েছে। ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ২২টি আসন, বিজেপি জেতে ১৮টি আসনে। সেই জায়গায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির এই তৎপরতার মধ্যেও সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের ১৩টি আসন বাড়বে। বিজেপি হারাবে ১১টি আসন। রাজনৈতিক মহলের কাছে এটা খুব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।
তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর মতো প্রকল্পের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজেপির পায়ের তলার মাটি আরও আলগা হয়েছে। তৃণমূলের নিজস্ব সমীক্ষাতেও উঠে এসেছে যে, এই মুহূর্তে ভোট হলে তৃণমূল পাবে ৩৮টি আসন। বিজেপি (BJP) মেরেকেটে চারটি আসন দখলে রাখতে পারে। নতুন আসনে হাত বসাতে পারবে না। বিজেপির জনসমর্থন যে রাজ্যে আগের তুলনায় কমেছে, তা তাদের সভা ও মিছিলগুলোর লোকসংখ্যা থেকেই স্পষ্ট। এর জন্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও মোদির বিভিন্ন জনবিরোধী নীতির প্রভাব বেশি। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত শুভেন্দু অধিকারীকে সামনে রেখে বিজেপির দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন এখনও পর্যন্ত জনগণের মধ্যে দাগ কাটছে না বলেই রাজনৈতিক মহলের মত।
তবে শুধু বাংলায় নয়, সর্বভারতীয় স্তরেই বিজেপি জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে বলে সমীক্ষায় ধরা পড়েছে। ২০১৯-এ এনডিএ ৩৩৩ আসন পেয়েছিল। এখন ভোট হলে এনডিএ মেরেকেটে ২৮৬ আসন পেতে পারে। অন্যদিকে, কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ জোট পেতে পারে ১৪৬টি আসন। গত লোকসভা নির্বাচনে ইউপিএ জিতেছিল ৯১ আসন। অন্যান্য বিরোধী দল ১১১টি আসন জিততে পারে। সম্প্রতি রাজনৈতিক পালাবদল ঘটে যাওয়া দুই রাজ্য – মহারাষ্ট্র ও বিহারে গেরুয়া শিবিরে ধস নামতে চলেছে বলে অনুমান। ওই দুই রাজ্যে অন্তত ২০টি করে আসন কমবে এনডিএ’র। বাংলা, মহারাষ্ট্র ও বিহারেই এনডিএ সমীক্ষায় ৫০টি আসন খুইয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, তিন রাজ্যে যদি এনডিএ এতগুলি আসন হারায় তাহলে কোনওভাবেই তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি পৌঁছনো সম্ভব নয়। তবে এটাও ঠিক, আগামী দু’বছর রাজনীতির জন্য অনেকটা সময়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.