Advertisement
Advertisement
Panchayat Election

Panchayat Poll 2023: ‘ভোট মানেই প্রাণঘাতী’, নাম শুনলেই আঁতকে ওঠে CPM-এর হাতে প্রাণ যাওয়া TMC সমর্থকের পরিবার

প্রতিশ্রুতির পরও চাকরি পাননি ছেলে!

TMC supporter killed by CPM, family frightened about Panchayat Election | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 13, 2023 5:56 pm
  • Updated:June 15, 2023 4:30 pm  

রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: ভোটের (West Bengal Panchayat Election 2023)  কথা শুনলে আঁতকে ওঠে তারা। এই ভোটের দিন তাদের পরিবারের একমাত্র রোজগেরেকে সিপিএমের দুষ্কৃতীদের হাতে প্রাণ হারাতে হয়েছিল। অপরাধ সে তৃণমূল করত। তাই সেদিনের ভোটের আতঙ্ক এখনও ভুলতে পারেননি তেহট্ট থানার বেতাই দক্ষিণ চিতপুরের সরকার পরিবার। তাই ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মা ও ছেলে।

ঘটনাটা গত ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময়ের। বেতাই দক্ষিণ জিতপুর খরের মাঠের কৃষ্ণপদ সরকার (৫৬) সকাল সকাল ভোট দেবেন বলে মাঠের কাজ ফেলে সকলের সঙ্গে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। বিশেষ কাজে বাড়ি থেকে আসছি বলে লাইন থেকে বেরিয়ে বাড়ি এসেছিলেন। লাইনে দাঁড়ানো সকলকে বলেছিলেন, তাঁর জায়গাটা দেখতে, বাড়ি থেকে ফিরে এসে লাইনে দাঁড়াবেন। আর ঘুরে আসা হয়নি তাঁর। বাড়ি যাওয়ার সময় বুথ থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে সিপিএমের দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞান হারান। কৃষ্ণপদর মাথার আঘাত এতটাই গুরুতর ছিল যে আর জ্ঞান ফেরেনি। পঞ্চায়েত ভোটের দিন দুপুরের দিকে কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। তিনি ছিলেন সংসারে একমাত্র রোজগেরে। তৃণমূল সমর্থক। জানালেন কৃষ্ণপদবাবুর স্ত্রী গীতা সরকার এবং ছেলে প্রকাশ সরকার।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ভারতীয় সেনায় পাকিস্তানি নাগরিক! নজরে বারাকপুর ক্যাম্প]

কৃষ্ণপদবাবুর স্ত্রী গীতা সরকার বলেন, “আমার স্বামী কেবলমাত্র তৃণমূলকে ভালবেসে দলটা করতেন, এর বেশি কিছুই না। তৃণমূলকে ভালবেসে ভোট দিতে গিয়ে সিপিএমে লেঠেল বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল আমার স্বামীর। মৃত্যুর পরে তৃণমূলের ছোট-বড় নেতাকর্মীদের আনাগোনায় বাড়ি ভরে গিয়েছিল। তাঁরা বাড়িতে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার। এমনকী, ছেলে প্রকাশের একটা কর্মসংস্থানেরও আশ্বাস দিয়েছিলেন। এখন বুঝতে পারছি সেগুলো ছিল ভোটের রাজনীতি, শুধু মুখের কথা। বিধবা ভাতা ছাড়া আর কিছুই পাইনি। এমনকী সরকারের দেওয়া শৌচালয়টাও পাইনি।” তাঁর আরও বিলাপ, “২০১১ সালে স্বামীর মৃত্যুর আগে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর সিপিএম-তৃণমূলের মধ্যে একটি ঝামেলা হয়েছিল। ছেলে তখন ছোট, ছাত্র। বাড়িতে না থাকা সত্ত্বেও সিপিএমের লোকজন অভিযুক্ত হিসেবে ছেলের নামটা দিয়ে দিয়েছিল। সে মামলা এখনও চলছে। ফায়ার ব্রিগেডের চাকরির লিখিত পরীক্ষায় পাস করা সত্ত্বেও ছেলের নামে কেস থাকায় চাকরিটা হয়নি। ছেলে এখন সেলসম্যানের কাজ করে সামান্য রোজগারে আমাদের দুজনের সংসার চলছে।

 

ছেলে প্রকাশ সরকার জানান তিনি বিএ পাস করেছে। বলছেন, “নেতাদের কথায় আশ্বস্ত হয়ে ভেবেছিলাম হয়তো পরিবারের জন্য কোনও একটা সুখবর আসবে, কোনও সুখবর আসেনি। অথচ কেস মিটিয়ে দেবে বলে প্রায় এক লক্ষ টাকা নিয়েছিল তৃণমূলের এক নেতা। আমার চাকরিটাও হয়নি। বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমরা খুব খারাপ অবস্থায় আছি। সামান্য কয়েক কাঠা সরকারি পাট্টা জমি ছাড়া আমাদের আর কিছুই নেই।” ছলছল চোখে হতাশ গলায় তিনি বললেন, “প্রতিশ্রুতি রাখেনি কেউই। যে ভোটে প্রাণ যায়, সেই ভোট দিয়ে কী লাভ! সেই কারণে জীবনে কোনওদিন ভোট দেব না বলে স্থির করেছি।”

[আরও পড়ুন: দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় হাজিরা দেওয়া সম্ভব না, ইডিকে চিঠি অভিষেকের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement