সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: “দিদিকে বলো” কর্মসূচিকে সামনে রেখে আমতার হারানো জমি ফিরে পেতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত বিধানসভা নির্বাচনে হাওড়া জেলার মোট ১৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৫টিই তৃণমূল দখল করতে সক্ষম হলেও একমাত্র আমতা বিধানসভা আসনটি তাদের হাতছাড়া হয়। তৃণমূল প্রার্থী তুষার শীল বামফ্রন্ট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মিত্রের কাছে সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব তাই এখন থেকেই আমতা কেন্দ্রটি দখল করার জন্য ঝাঁপাতে চাইছে। “দিদিকে বলো” কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে গত বিধানসভা নির্বাচনের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী তুষার শীল এবং আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল আমতা কেন্দ্রের মানুষদের সঙ্গে মিলিত হয়ে পায়ের নিচের হারানো মাটি ফিরে পেতে চেষ্টার বিন্দুমাত্র ত্রুটি রাখছেন না।
শনি ও রবি – টানা দুদিন এলাকার দ্বীপাঞ্চল উত্তর ভাটোরার বিভিন্ন স্থান চষে বেড়ালেন সুকান্ত পাল। উলটোদিকে আমতার নওপাড়া এলাকার মানুষদের সঙ্গে দেখা করে কথা বললেন তুষার শীল। উভয় ক্ষেত্রেই দলের অসংখ্য কর্মী, সমর্থক ছাড়াও জনপ্রতিনিধিরা এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। তুষার শীল রবিবার নওপাড়া এলাকার মানুষদের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন হাওড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ রমেশ পাল, পঞ্চায়েত প্রধান রিম্পা ভূঁইঞা সহ অন্যান্য নেতারাও। তিনি এলাকার মানুষের হাতে “দিদিকে বলো” ভিজিটিং কার্ড ও অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেন। যেসব সমস্যার স্থানীয়ভাবে সমাধান করা সম্ভব, সেগুলি তিনি তৎক্ষণাৎ সমাধানের উদ্যোগ নেন। আর যে সমস্যাগুলি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো প্রয়োজন, তাও তিনি লিপিবদ্ধ করে নেন। রবিবার রাতে তুষারবাবু দলীয় কর্মী প্রদীপ চক্রবর্তীর বাড়িতে থেকে সোমবার সকালে এলাকার আরও কিছু মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ওই এলাকায় দলীয় পতাকা উত্তোলন করবেন।
পাশাপাশি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল শনিবার উত্তর ভাটোরার গায়েনপাড়ার ঘাট এলাকার মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তিনি দলীয় সমর্থক ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে “দিদিকে বলো” লেখা টি-শার্ট, ভিজিটিং কার্ড ও মোবাইল স্টিকার বিতরণ করেন। এলাকার মানুষদের অভাব অভিযোগের কথা শোনার পাশাপাশি তিনি এলাকার পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। সেখানকার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বাসিন্দা সনৎ পাত্রকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবিক প্রকল্পগুলি সম্পর্কে অবগত করেন। এরপর স্থানীয় কালীমাতা ক্লাবে বসে দলীয় কর্মী ও এলাকার মানুষদের সমস্যার কথা শোনেন। তাঁদের সকলকে সরকারি সুযোগ-সুবিধার বিষয়েও অবহিত করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সমিতির কর্মাধ্যক্ষ জলধর চক্রবর্তী, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অশোক গায়েন-সহ একাধিক দলীয় নেতা। সবমিলিয়ে, মুখ্যমন্ত্রীর বেঁধে দেওয়া এই জনসংযোগ কর্মসূচিকে সামনে রেখেই আমতায় ফের নিজেদের আধিপত্য কায়েম করার লক্ষ্যে মরিয়া লড়াইয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.