শেখর চন্দ্র, আসানসোল: শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)সভায় তুমুল বিশৃঙ্খলা, কম্বল নিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। ব্যাকফুটে বিজেপি (BJP)। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে। রবিবার সেসব পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আসানসোল গেল তৃণমূলের (TMC) প্রতিনিধি দল। ছিলেন তিন মন্ত্রী শশী পাঁজা, বাবুল সুপ্রিয়, পার্থ ভৌমিক, যুব তৃণমূল সভানেত্রী সায়নী ঘোষরা। স্বজনহারা পরিবারগুলির সঙ্গে সাক্ষাতের পর আসানসোলের (Asansol)দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীকে কার্যত তুলোধোনা করলেন তাঁরা। কম্বলের রাজনীতি করা হয়েছে বলে তোপ দাগলেন শশী পাঁজা, সায়নী ঘোষরা।
গত বুধবার, ১৪ তারিখ আসানসোল কর্পোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ‘শিবচর্চা’ নামে কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তা ছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী কাউন্সিলর চৈতালী তিওয়ারি। অনুষ্ঠানে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। ভাষণ শেষে প্রতীকী কম্বল বিতরণ করে চলে যাওয়ার পরই চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। সভায় কম্বল দেওয়ার কথা ছিল ৫ হাজার। খোলা হয় ৫টি কাউন্টার। কিন্তু সেখানে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও শীতবস্ত্র নিতে আসা হাজার হাজার মানুষের শৃঙ্খলা রাখতে কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। চরম বিশৃঙ্খলা, হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে দুই মহিলা ও এক কিশোরী-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়। জখম হন আরও সাতজন।
এই ঘটনায় নিঃসন্দেহে ব্যাকফুটে শুভেন্দু অধিকারী। দলের অন্দরেই তাঁকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। যথারীতি রাজ্যের শাসকদলের কাছে এই ঘটনা আক্রমণের এক বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। রবিবার আসানসোলের দুর্ঘটনায় হতাহতদের বাড়িতে যান শশী পাঁজা, মলয় ঘটক, বাবুল সুপ্রিয়, সায়নী ঘোষরা। তাঁদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের পরিজনরা। সায়নী তাঁদের সামলান।
সেখান থেকে ফিরে আসানসোলের দলীয় কার্যালয় সাংবাদিক বৈঠক থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণে বিদ্ধ করেন তৃণমূলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ (Saayoni Ghosh)। তাঁর কথায়, ”কম্বল বিলি করে ভোট কিনতে গিয়েছিলেন? দেখবেন, আপনার দেওয়া কম্বল গায়ে দিয়ে ওঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেবেন। সেদিন যাঁরা ওঁদের কম্বল নেওয়ার জন্য ডেকেছিলেন, তাঁরা সেই ঘটনার পর কেউ আসেননি। আমাকে ওই পরিবারগুলো এসব আক্ষেপ করে বলছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যাননি।” শশী পাঁজার কটাক্ষ, ”রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া দলগুলিই এমন কাজ করে। এমনিতেই বিজেপির সভায় ৫০০ লোকও হয় না। যদি না তার সঙ্গে কম্বল বিলির মতো অনুষ্ঠান যোগ করা হয়।” বাবুল সুপ্রিয়র (Babul Supriyo) দাবি, ”যেভাবে এখানকার তৃণমূল নেতারা পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়েছে, তা দেখে বিজেপির শেখা উচিত। ওদের ডাকে সাড়া দিয়েই মৃত্যু, অথচ তারপর তারাই আর কোথাও নেই। লজ্জাজনক ঘটনা!”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.