Advertisement
Advertisement
Panchayat Election 2023

Panchayat Election 2023: বাদ বহু হেভিওয়েট, জেলা পরিষদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই ক্ষোভ পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলে

৬৬টি আসনের মধ্যে ৩৭টি আসনে নতুন মুখ আনা হয়েছে দলের তরফে।

Panchayat Election 2023: TMC releases candidate list of Purba Bardhaman, many important leaders missing
Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 14, 2023 8:53 pm
  • Updated:June 15, 2023 4:13 pm  

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ত্রিস্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের (Panchayat Election 2023) তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় বাদ পড়লেন পূর্ব বর্ধমানের বেশ কয়েকজন ‘হেভিওয়েট’ নেতানেত্রী। জেলা পরিষদের কয়েকজন কর্মাধ্যক্ষ এবার টিকিট পাননি। বাদ পড়েছেন কয়েজন সদস্যও। বেশ কয়েকজন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ সভাপতি, প্রধান, উপপ্রধানও এবার টিকিট পাননি। বাদ পড়াদের অনেকের মধ্যেই ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। প্রকাশ্যে সেভাবে মুখ না খুললেও পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়দানে নামতে হয়েছে তৃণমূলের ব্লক সভাপতিদের। দফায় দফায় বৈঠকও হয়েছে বুধবার। দল ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতির কথা আগে বললেও প্রার্থী তালিকায় অবশ্য তার প্রভাব দেখা যায়নি। জেলা পরিষদের প্রার্থী তালিকায় এবার নতুন মুখের প্রাধান্য। ৬৬টি আসনের মধ্যে ৩৭টি আসনে নতুন মুখ আনা হয়েছে দলের তরফে।

জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ উত্তম সেনগুপ্ত, জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বাগবুল ইসলাম, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল, শিক্ষা-সংস্কৃতি কর্মাধ্যক্ষ দেবাশিস নাগ এবার টিকিট পাননি। জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অশোক বিশ্বাসকেও এবার প্রার্থী করা হয়নি। মেমারি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মামণি মুর্মুকেও এবার টিকিট দেওয়া হয়নি। দুই বারের জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল হাসানকেও এবার টিকিট দেয়নি জল। বাদ পড়াদের তালিকা আরও দীর্ঘ। প্রকাশ্যে দলবিরোধী কথা কেউ বলতে নারাজ। তবে অভিমান কাজ করছে সবার মধ্যেই।

Advertisement

[আরও পড়ুন: হাওয়ালায় ১১ কোটি লেনদেন, ১০০ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ‘কালীঘাটের কাকু’র বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ED]

নুরুল হাসান ১৩ বছর অবিভক্ত বর্ধমান জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছিলেন। অভিমানের সুরে তিনি বলেন, “চারবার জেলা পরিষদে, একবার পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হয়েছি। ১৯৯৮ সাল থেকে দল করে এসেছি। বহু মার খেয়েছি। দলের দুর্দিনে হেরে যাব জেনেও যাতে সিপিএম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় না জিততে পারে, তার জন্য পরিবারের সকলকে (বাবা, আমি, আমার স্ত্রী, আমার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী) প্রার্থী করেছিলাম লাল সন্ত্রাস উপেক্ষা করে। এখন দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিশ্চয়ই ভাল মনে করেছে। দলের প্রার্থীরা জিতুক তার জন্য শুভকামনা রইল। শুধু একটাই প্রশ্ন থেকে গেল, দলের ‘এক ব্যক্তি, এক পদে’র নীতি এখানেও মানা হল না। এর কারণ নিশ্চয়ই দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব বিবেচনা করবেন।” কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইলের সঙ্গে এদিন মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে টিকিট না পাওয়ার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বাগবুল ইসলাম বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। বৃহস্পতিবার থেকেই দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে নেমে যাব।” উত্তম সেনগুপ্তর সঙ্গে মোবাইলে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

রায়নার বিধায়ক তথা জেলা‌ পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি এবারও টিকিট পেয়েছেন। ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীকে ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে টিকিট দেওয়া হয়েছে। দলের ‘এক পদ, এক নীতি’র কারণে কয়েক মাস আগে জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মেহমুদ খান। এবারও পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রার্থী করা হচ্ছে তাঁকে। বর্ধমান-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তথা বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা (বিডিএ)-র চেয়াপার্সন কাকলি গুপ্তা-কে পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের বর্ধমান-২ ব্লকের সভাপতি পরমেশ্বর কোঙার, গলসি-২ ব্লক সভাপতি সুজন মণ্ডল পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট পেয়েছেন। খণ্ডঘোষের তৃণমূল ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলিম (ফাগুন) জেলা পরিষদের টিকিট পেয়েছেন। বিভিন্ন ব্লকেই সভাপতি, যুব সভাপতিরাও টিকিট পেয়েছেন।

[আরও পড়ুন: ‘অগ্রগতি কোথায়?’, প্রাথমিক নিয়োগ ফের তদন্তের গতি নিয়ে CBI-কে ভর্ৎসনা হাই কোর্টের]

জেলা পরিষদের বিদায়ী সহকারি‌ সভাধিপতি দেবু টুডুকেও এবার প্রার্থী করা‌ হয়েছে। ২০১৩ সালে অবিভক্ত বর্ধমানের জেলা পরিষদ প্রথমবারের মত দখল করেছিল তৃণমূল। সেবার সভাধিপতি হয়েছিলেন তিন। সংরক্ষণের গেরোয় ২০১৮ সালে সহকারি সভাধিপতি হতে হয়েছিল তাঁকে। এবারও প্রার্থী করা‌ হয়েছে। এবার সভাধিপতির আসনটি তফশিলি জাতি সংরক্ষিত। জেলা পরিষদের মেন্টর তথা প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল প্রামাণিক জেলা পরিষদের টিকিট পাওয়ার অন্যতম দাবিদার ছিলেন। জেলা পরিষদের আসন তফশিলি জাতি সংরক্ষিত হওয়ায় টিকিট পেলে তিনি সভাধিপতি হওয়ার দৌড়েও থাকতেন। কিন্তু দল প্রার্থী করেনি তাঁকে। এদিন রায়না-২ ব্লকেও প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভের আঁচ মিলেছে। দলের ব্লক সভাপতি অসীম পাল দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, “প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে। বৈঠক করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement