দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: কয়েকদিন আগেই আইএসএফ ও তৃণমূলের সংঘর্ষে উত্তাল হয়েছিল ভাঙড়ের (Bhangar)হাতিশালা এলাকা। যে ঘটনার জেরে ভাঙড়ের ISF বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি এখনও পুলিশি হেফাজতে আছেন। শুক্রবার সেই হাতিশালা লাগোয়া জিরানগাছা গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনে যান তৃণমূলের তারকা সাংসদ মিমি চক্রবর্তী (TMC MP Mimi Chakraborty)। তিনি হাতিশালার ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ভাঙড়ের মানুষ খুব শান্তিপ্রিয়। হাতে গোনা কয়েকটা লোকের জন্য ভাঙড়ের বদনাম হচ্ছে। কিছু মানুষের বদ মেজাজের জন্য, কিছু মানুষের হিংসার জন্য, তাঁদের রগচটা কথাবার্তার জন্য ভাঙড়ের বদনাম হচ্ছে। আমি সবাইকে একটাই অনুরোধ করবো এলাকার উন্নয়নের জন্য আপনারা ব্যক্তিগত এজেন্ডাকে দূরে রেখে একসঙ্গে কাজ করুন।” মিমি যখন এই কথা বলছেন তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম (Arabul Islam), মোমিনুল ইসলাম, প্রদীপ মণ্ডলরা। আর এখানেই প্রশ্ন, মিমি কাদের উদ্দেশ্যে এই মন্তব্য করলেন?
ভাঙড় ২ ব্লকের জিরানগাছা গ্রামীণ হাসাপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান যাদবপুরের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। শুক্রবার তিনি প্রথম হাসাপাতালে আসেন। প্রথমেই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর বিভিন্ন ওয়ার্ড, এমনকী হাসপাতালের রান্নাঘর পর্যন্ত ঘুরে দেখেন। ওয়ার্ডে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ সাংসদের! মাঝে একটা প্লাইউডের বেড়া। তারই দু’পাশে পুরুষ ও মহিলা রোগীদের চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালের বিএমওএইচ (BMOH) চিকিৎসক হিরণ্ময় বসু জানান, নতুন বিল্ডিং এর কাজ চলায় আপাতত একই সাথে রোগীরা থাকছেন। তবে রাতে কোন পুরুষ রোগী রাখা হয়না মহিলা রোগীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে। এভাবে রোগী পরিষেবা দেওয়ায় কঠিন ব্যপার বলে মন্তব্য করেন সাংসদ।
এরপর সাংসদ হাসপাতালের রান্নাঘরে যান। সেখানে চাল, ডাল, সবজি সবকিছু পরীক্ষা করেন তিনি। মাত্র ৪৬ টাকায় সুষম খাদ্য দেওয়ায় তিনি অবাক হন। বস্তা থেকে চাল বের করে হাতে নিয়ে দেখেন মিমি। হাসপাতালের চারপাশে নোংরা আবর্জনা ও ঝোপঝাড় দেখে তিনি উষ্মাপ্রকাশ করেন। একশো দিনের কাজের মাধ্যমে ঝোপঝাড় পরিষ্কার করার নির্দেশ দেন প্রধানকে।
মিমির বক্তব্য, এখানে ঢোকার রাস্তাটা খারাপ আছে। সেই রাস্তার কাজ দ্রুত মেরামতের পাশাপাশি হাসাপাতাল বিল্ডিং নির্মানের কাজ যাতে তাড়াতাড়ি শেষ হয় সে ব্যাপারে নজর দেওয়া হয়েছে। এদিন মিমি, আরাবুল-সহ অন্যান্য জন প্রতিনিধিরা ২৫ জন যক্ষ্মা রোগীকে দত্তক নেন। জানান, তাঁদের পুষ্টিকর খাবার ও পথ্য প্রদান করা হবে।
চার বছর আগে, ২০১৯ সালে এই ভাঙড় থেকেই বিপুল ভোট পেয়ে, যাদবপুর (Jadavpur) লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করে সাংসদ হয়েছিলেন মিমি চক্রবর্তী। চার বছর পরও তারকা সাংসদ হিসাবে তাঁর জনপ্রিয়তায় এতটুকু ভাটা পড়েনি, তা বোঝা গেল জিরানগাছাতে। বহু মানুষ এদিন জিরানগাছাতে এসেছিলেন মিমিকে একঝলক দেখতে। এমনকি তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে যথেষ্ট উচ্ছ্বাস ছিল মিমির সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.