পলাশ পাত্র, তেহট্ট: দলীয় সাংসদের ব্যবহারে ক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়ক। ক্ষোভের কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি। ঘটনা জানাজানি হতেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কঙ্কালসার চেহারা প্রকাশ্যে আসায় চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল। কর্পোরেট কায়দায় দল পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে। ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও জেলা পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন নদিয়ার নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের পরই কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের সভানেত্রী করা হয় মহুয়াকে। তারপর থেকে সাংগঠনিক কর্মসূচি শুরু করেন এই তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু সাংগঠনিক কাজকর্মে তাঁর পদক্ষেপ, তাঁর আচরণে কিছুটা অসন্তুষ্ট দলীয় নেতা-কর্মীরা। সূত্রের খবর, আগস্টে কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত দলের সব ব্লক সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতিকে চিঠি পাঠান তৃণমূল সাংসদ। তাতে সেপ্টেম্বর মাসে এই দুই স্তরে সাংগঠনিক বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছিল। তাতে ব্লক কমিটিগুলিকে বলা হয় ১ ও ১৬ সেপ্টেম্বর মধ্যে পঞ্চায়েত প্রধান, বুথ, জেলা পরিষদ ও অঞ্চল সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক সারতে হবে। একইভাবে অঞ্চল কমিটিকে বলা হয় ২ ও ১৭ সেপ্টেম্বর অঞ্চল কমিটির বৈঠক করতে হবে। এবং দুই বৈঠকের প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত নথিবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু চিঠির শেষে ইংরাজিতে ‘বাই অর্ডার’ এবং তার নিচে মহুয়া মৈত্র লেখা ছিল। এই ভাষা নিয়েই ক্ষুব্ধ দলীয় নেতা-কর্মীরা।
এতেই অসন্তুষ্ট হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের ক্ষোভের কথা চিঠিতে জানিয়েছেন নাকাশিপাড়ার চারবারের বিধায়ক কল্লোল খাঁ। তিনি লিখেছেন, যে ভাষায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা কর্পোরেট সংস্কৃতি, দলীয় নয়। এমনকী বিধায়কের অভিযোগ, এমন ভাষায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনওদিন নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেননি। তিনি লিখেছেন, তৃণমূলে প্রত্যেকে আন্তরিকতা দিয়ে দল করেন। কিন্তু সাংসদের চিঠিতে তাঁর দুঃখিত ও লজ্জিত। চিঠির কপি তিনি জেলার পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেও পাঠিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনের প্রচারেও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বদলে নিজের টিম নিয়ে কাজ করেন মহুয়া। তা নিয়ে অসন্তুষ্ট হয় জেলা নেতৃত্বের একাংশ। মমতার কাছে এনিয়ে অভিযোগও করেন কেউ কেউ। এবার বিধায়কের ক্ষোভের চিঠি দলের মধ্যেই বিড়ম্বনায় ফেলল নবনির্বাচিত সাংসদকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.