শেখর চন্দ্র, আসানসোল: পরপর চারবার ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে পেনশন পাওয়ার জন্য ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন। অন্তত দু’বার পঞ্চায়েত অফিসে এবং বিডিও অফিসে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু পেনশন প্রাপকের তালিকায় নাম ওঠেনি বৃদ্ধার। কাগজপত্রের বা প্রয়োজনীয় কিছু ত্রুটির জন্য প্রতিবারই বাতিল হয়েছে আবেদন। শেষ পর্যন্ত সেই অসহায় বৃদ্ধার পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। তিনি কথা দিলেন ওই বৃদ্ধা যতদিন বাঁচবেন ততদিন তিনি পেনশনের হাজার টাকা করে তার হাতে পৌঁছে দেবেন। পেনশনের হাজার টাকা এবং আরও কিছু সামগ্রী বৃদ্ধা খাঁদু দে’র বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন বিধায়ক।
সালানপুর ব্লকের দেন্দুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকার কল্যানেশ্বরী অঞ্চলের থাকেন ৮৫ বছরের বৃদ্ধা খাঁদু দেবী। বছর দশেক আগে তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের রাস্তার পাশে চা বিক্রি করতেন তার স্বামী। তাদের তিন মেয়ের সকলের বিয়ে হয়ে গেছে। এই অবস্থায় অসহায় বৃদ্ধা কল্যাণেশরীতেই বিয়ে হওয়া এক মেয়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। মেয়ে জামাইয়ের আর্থিক অবস্থা বিশেষ ভাল নয়। জামাই কাজ করেন মন্দিরের পাশে ফুল মিষ্টি দোকানে। তাই মেয়ের বাড়িতে বোঝা হয়ে না থেকে ঠোঙা বানানো শুরু করেন।
কিন্তু কিছুদিন আগে পথ দুর্ঘটনায় কোমর ভেঙে যায় বৃদ্ধার। তার ফলে ঠোঙা তৈরি করে বিক্রি করতে বাইরে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। কঠিন এই পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকাই দায় হয়ে ওঠে। এই সময় কল্যাণেশ্বরীর বাসিন্দা তৃণমূল কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠনের নেতা মনোজ তেওয়ারি বৃদ্ধাকে সহযোগিতা করতে থাকেন। বিষয়টি বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় জানার পর বৃদ্ধা খাঁদু দেবীর পাশে থাকার উদ্যোগ নেন।
প্রতিশ্রুতি দেন আজীবন মাসে হাজার টাকা করে খাঁদু দেবীর হাতে পৌঁছে দেবেন। এছাড়া চিকিৎসা সহ অন্যান্য প্রয়োজন মেটাবেন। সালালপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ভোলা সিং বলেন, “শুধু ওই বৃদ্ধাই একা নন অনেক বৃদ্ধাকেই মাসিক সহযোগিতা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। যে কোন ব্যক্তির অসুবিধায় বিধায়ক তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছে।” তবে সরকারিভাবে যেন সেই সহযোগিতা বেশি বেশি পৌঁছানো যায় কাগজপত্র যেন ত্রুটিমুক্ত হয় সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.