Advertisement
Advertisement

Breaking News

Purbasthali

সক্রিয় অসাধু চক্র! পূর্বস্থলীর ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি শিক্ষকের নাম দেখে বিস্ফোরক TMC বিধায়ক

হাজার-হাজার টাকার বিনিময়ে অনলাইনে ভোটার তালিকায় 'ভূতে'র দাপট বাড়ছে, অভিযোগ বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের।

TMC MLA of Purbasthali alleges that some group is taking bribe to put names of the people in voter list who are not citizen
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 7, 2025 7:44 pm
  • Updated:March 7, 2025 7:44 pm  

অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বাংলার ভোটার তালিকায় ‘ভূতে’র উপস্থিতির কথা স্বীকার করেছে খোদ নির্বাচন কমিশন। একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটারের নাম তালিকা থেকে সরিয়ে সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কমিশনের কর্তারা। তবে তার মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ‘ভূতুড়ে’ ভোটারের খোঁজ মিলছে ভুরি ভুরি। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর ভোটার তালিকায় এবার দেখা গেল বাংলাদেশি শিক্ষকের নাম। ভারতে স্ত্রী, পুত্র পরিবার থাকলে কী হবে, বাংলাদেশেই তাঁর বসবাস। সেখানকার স্কুলে শিক্ষকতা করতেন তিনি। শুধু তাই নয়, তিনি আবার বাংলাদেশেরও ভোটার। এমনই দাবি পূর্বস্থলীতে থাকা ভৃগুরাম দাসের পরিবারের। আর তা নিয়ে পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় তুললেন বিস্ফোরক অভিযোগ। বললেন, ‘‘১৫-২০ হাজার টাকা করে নিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলে দিচ্ছে।”

‘ভূতুড়ে’ ভোটার নিয়ে শুক্রবার সরব হয়েছেন পূর্বস্থলীর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, হাজার-হাজার টাকার বিনিময়ে অনলাইনে ভোটার তালিকায় নাম তোলার কাজে সক্রিয় রয়েছে বড়সড় চক্র। শুধু তাই নয়, স্ক্রুটিনির পরেও ভোটার তালিকায় এখনও প্রচুর পরিমাণে ত্রুটি থাকায় মৃতদের নামও ভোটার তালিকায় উঠে এসেছে বলে অভিযোগ বিধায়কের। ভোটার তালিকায় কারচুপি ও ‘ভূতুড়ে’ ভোটার বের করতে দুয়ারে-দুয়ারে ঘুরছে তৃণমূল নেতৃত্ব। শুক্রবার সকালে পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার বিদ্যানগর এলাকায় বাড়ি-বাড়ি ঘুরে ভোটার তালিকা ধরে-ধরে এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ যখন খোঁজখবর নিচ্ছেন, তখন পাশের বিধানসভা পূর্বস্থলী উত্তর এলাকায় ‘ভূতুড়ে’ ভোটার নিয়ে অর্থাৎ এক বাংলাদেশি শিক্ষকের এই রাজ্যের ভোটার তালিকায় নাম থাকায় শোরগোল পড়ে গেল এলাকায়।

Advertisement

বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় জানান, কালেখাঁতলা ১ পঞ্চায়েতের নন্দীগ্রামে ভৃগুরাম দাসের পরিবার রয়েছে। যদিও ভৃগুরাম এখানে থাকেন না, বাংলাদেশে থাকেন। সেখানেই তিনি শিক্ষকতার চাকরি করেন। তবে পূর্বস্থলীর বাড়িতে আসাযাওয়া করেন। এই রাজ্যের ভোটার তালিকায় ভৃগুরামের নাম রয়েছে। এখানকার ভোটার তালিকায় তাঁর যে নাম রয়েছে, সেকথা স্বীকার করে নেন বাংলাদেশি ভৃগুরামের স্ত্রী সুলেখারানি দাস। যদিও তাঁর স্বামী এখানে ভোট দেন না বলেই দাবি করলেন সুলেখাদেবী। তাঁর আত্মীয়দের দাবি, ভৃগুরামকে মাঝেমধ্যেই এখানে দেখা যায়।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দু-দশক আগে থেকে তাঁদের এখানে বসবাস। একতলা পাকা বাড়ি ও কিছু জমিজমাও রয়েছে। ভৃগুরামের এক পুত্র শিফনচন্দ্র দাস এখানে টোটো চালান। তাঁর বউমা, নাতনিও রয়েছেন। ভৃগুরামের স্ত্রী সুলেখা দেবী জানান, “স্বামী এখানেই থাকতেন। যদিও আমাদের বিয়ে হয় বাংলাদেশে। তিনি এই রাজ্যের ভোটার হন। পরে বাংলাদেশের দাসকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পান তিনি। তারপর থেকেই বাংলাদেশের ঘোলা জেলার চরপেশো এলাকায় থাকতে শুরু করেন। পরে বাংলাদেশের ভোটার হন। কিন্তু তিনি এখানে কোনওদিনই ভোট দেননি। স্বামী বর্তমানে অবসর নিয়েছেন। এখন গৃহশিক্ষকতা করেন।” স্ত্রীর আরও দাবি, স্বামীর নাম এখানকার ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হোক। যদিও এই নিয়ে ভৃগুরাম কোথাও আবেদন করেছে কিনা সেই নিয়ে পরিষ্কার করে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বিধায়কের অভিযোগ, “আমার ব্লকে এমন বহু মানুষের নাম ভোটার তালিকায় আছেন, যাঁদের চিনি না, জানিনা, তাঁরা থাকেন না। কেউ আবার হয়তো বাংলাদেশে চাকরি করেন। তার আবার ভোটার লিস্টে অদ্ভূতভাবে নাম রয়েছে। অনলাইনে ১৫-২০ হাজার টাকা করে নিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলে দিচ্ছে অসাধু চক্র।” বিধায়কের আরও অভিযোগ, এই এলাকার বাসিন্দা নয় এরকম কয়েকশো জনের নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে। এই নিয়ে তিনি ব্লক প্রশাসনের কাছে যেমন অভিযোগ জানিয়েছেন, তেমনই হাজার-হাজার টাকার বিনিময়ে অনলাইনে ভোটার লিস্টে যারা ‘ভূতুড়ে’ ভোটারদের নাম তুলে দিচ্ছে সেই চক্রকে ধরতে পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বিধায়ক।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement