ধীমান রায়, কাটোয়া: ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার। শুক্রবার রাতে আউশগ্রামের পশ্চিমপাড়ায় নিশিযাপন করে স্থানীয়দের অভিযোগের কথা শোনার কথা ছিল তাঁর৷ কিন্তু পরিকল্পনামাফিক কাজ হল না৷ দলের স্থানীয় নেতৃত্ব ও বেশ কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে আউশগ্রামে ঢুকতেই গ্রামবাসীরা বিধায়ককে আটকে দেন। তাঁকে ঘিরে ধরে শুরু হয় বিক্ষোভ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশকে দিয়ে এই গ্রামের বেশ কয়েকজন নিরীহ মহিলা ও পুরুষকে ‘মিথ্যা মামলা’য় ফাঁসানো হয়েছে। আগে তাঁদের ওই সমস্ত মামলা থেকে মুক্তি দিতে হবে। তারপরেই তাঁকে সব অভিযোগ জানানো হবে৷ পরে আউশগ্রাম থানার পুলিশ গিয়ে বিধায়ককে উদ্ধার করে আনে। বিক্ষোভের জেরে আউশগ্রামে দলীয় কর্মসূচি না করেই ফিরে আসেন অভেদানন্দ থান্ডার। ঘটনা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ, গ্রামবাসীরা নন, বিজেপি ও সিপিএম কিছু মানুষকে উসকানি দিয়ে অশান্তি পাকানোর উদ্দেশ্যে ঝামেলা করেছিল। যদিও পুলিশ হস্তক্ষেপ করায় লোকজন পালিয়ে যায়।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ অনুযায়ী, দলীয় বিধায়কদের প্রত্যেককেই নিজের নিজের এলাকায় ঘুরে শুনতে হবে সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগের কথা। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে তাই ব্যস্ত তৃণমূল বিধায়করা। সেইমতো, শুক্রবার রাতে আউশগ্রামের পশ্চিমপাড়ায় নিশিযাপনের কথা ছিল আউশগ্রামের বিধায়কের। রাত প্রায় পৌনে আটটা নাগাদ বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আউশগ্রামের পশ্চিমপাড়ায় নিশিযাপনের জন্য গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আউশগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখ সালেক রহমান, ব্লকের কার্যকরী সভাপতি প্রশান্ত গোস্বামী-সহ স্থানীয় বেশ কয়েকজন কর্মী।
বিধায়ক পাড়ায় ঢুকতেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় শতাধিক গ্রামবাসী। তাঁদের অভিযোগ, শাসকদলের প্ররোচনায় গ্রামের অনেক মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। উল্লেখ্য, তিন সপ্তাহ আগে আউশগ্রামের মেটেপাড়া থেকে পাঁচ মহিলা-সহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীকে অপহরণের অভিযোগ করেছিলেন ব্লক তৃণমূল সভাপতি সালেক রহমান। ধৃতরা এখনও জেলবন্দি। শুক্রবার বিধায়ককে ঘিরে ধরে স্থানীয়রা দাবি করেন, ওই ৮ জনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেসব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। বিক্ষোভের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয় পুলিশ।
যে বাড়িতে নিশিযাপন করার কথা ছিল, সেখানে বিধায়ক গিয়ে দেখতে পান দরজা বন্ধ। বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয় বিধায়ক ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের।যদিও বিক্ষোভের কথা এড়িয়ে গিয়েছেন বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার। তিনি বলেন, ‘‘আউশগ্রামে যে বাড়িতে নিশিযাপনের কর্মসূচি ছিল, তাঁর বাড়িতে গিয়ে আমরা দেখলাম, লোকজন নেই। সেখান থেকে ঘুরে এসে অন্যত্র কর্মসূচি শেষ করেছি।” বিধায়ক মুখে যাই বলুন, কাজ করতে গিয়ে যে বেশ ধাক্কা খেলেন, তা স্পষ্ট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.