সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিমান জমেছে এতদিনে অনেকটাই। দলের সঙ্গে দূরত্ব শুধু শুধুই বাড়েনি। কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক মিহির গোস্বামী (Mihir Goswami) আরও একবার তা বুঝিয়ে দিলেন তাঁর নতুন ফেসবুক পোস্টে। তাতে তাঁর আক্ষেপ, ”আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই, অর্থাৎ এই দল আর আমার নয়, হতে পারে না।” এই অনুভূতির নেপথ্যে তাঁর যুক্তিও সাজিয়েছেন বিধায়ক। তিনি সাংগঠনিক পদ ছাড়ার পর থেকে দলের অনেকে তাঁকে ফোনে যোগাযোগ করলেও দলনেত্রীর কাছ থেকে একটি ফোনও আসেনি। আর তাতেই তাঁর মনে হয়েছে, দলের রাশ আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে নেই।
পুজোর আগে রাজ্যের শাসকদলের সংগঠনে অনেক রদবদল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্লক স্তর থেকে জেলা স্তর – সর্বত্রই খোলনলচে বদলে গিয়েছে। তাতে জেলা নেতৃত্বের তরফে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সেভাবেই কোচবিহার (Cooch Behar) দক্ষিণের বিধানসভা সংগঠনে দীর্ঘদিনের নেতা মিহির গোস্বামীর মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি, এই অভিযোগ সরব হয়ে সমস্ত সাংগঠনিক পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। এরপর নানা দলবিরোধী মন্তব্য প্রকাশ করেন। আবারও ফেসবুক পোস্ট করে মিহির গোস্বামী নিজের আক্ষেপ প্রকাশ করলেন। ‘নিষ্প্রভ দীপাবলি’র সঙ্গে শ্রীহীন চেহারার তুলনা করেছেন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক। পোস্টে লিখেছেন, যে দলের অভিধানে ‘সম্মান’ বলে শব্দটাই অনুপস্থিত, সেই দলে তিনি ২২ বছর কীভাবে কাটালেন, তা ভেবে বিস্ময় প্রকাশও করলেন। সেইসঙ্গে এও লিখেছেন যে সমস্ত অবজ্ঞা, অপমান সহ্য করে একজনের জন্যই তিনি দলে ছিলেন – ‘দিদি’।
এরপরই আসল কথা প্রকাশ করেছেন মিহির গোস্বামী। তিনি দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর অনেকের ফোন পেয়েছেন, অনেকের পরামর্শ পেয়েছেন। কিন্তু যাঁর থেকে একটি ফোন আশা করেছিলেন, সেই নেত্রী তাঁকে একবারও ফোন করেননি। এমনকী তাঁকে বরখাস্ত বা বহিষ্কারের কোনও নির্দেশে আর তাতেই তাঁর ধারণা, দল আর নেত্রীর হাতে নেই। তাই দলের সঙ্গে সমস্ত রকম সম্পর্ক ছিন্ন করাই স্বাভাবিক বলে মনে করছেন দলের দীর্ঘদিনের একনিষ্ঠ সদস্য।
মিহির গোস্বামীর ফেসবুক পোস্টের শেষাংশ থেকে নতুন করে জল্পনা তৈরি হচ্ছে। দলের সঙ্গে সবরকম সম্পর্কে ইতি টেনে তবে কি অন্য দলে যোগদানের কথা ভাবছেন তিনি? বিশেষত যেখানে পদত্য়াগের পরই মিহির গোস্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক, সেখানে এই জল্পনা উসকে ওঠাই স্বাভাবিক। বিধানসভার আগে এ প্রশ্নের উত্তর হাতড়াচ্ছেন অনেকেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.