অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে জলঙ্গির বিধায়ক (TMC MLA) আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল এবং জেলা পরিষদ সদস্য গৌতম সরকারকে সমস্ত দলীয় কর্মসূচী থেকে বিরত রাখার কথা ঘোষণা করা হল। পাশাপাশি দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য জলঙ্গি উত্তর জোনের সভাপতি বিষ্ণুপদ সরকারকেও তাঁর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে তৃণমূলের জলঙ্গি (Jalangi) ব্লক কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসব সিদ্ধান্তের কথা শোনালেন বহরমপুর সংগঠনিক জেলার সভানেত্রী শাওনী সিংহরায়। এদিন জেলা যুব সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রকি, জলঙ্গি দক্ষিণ জোনের সভাপতি মোহিত দেবনাথ-সহ অন্যান্যদের পাশে বসিয়ে এসব জানান।
শাওনী সিংহরায় বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা যে জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্বেও বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল, জেলা পরিষদ সদস্য গৌতম সরকার উপস্থিত থেকেও স্থায়ী সমিতির নির্বাচনে দলের পক্ষে ভোট দেননি। দলের কাছে এটা দুর্ভাগ্যের বিষয়।” জেলা সভানেত্রী জানান, “তাই বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল ও জেলা পরিষদ সদস্য গৌতম সরকারকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে শোকজ (Showcause) নোটিস পাঠানো হচ্ছে।” পাশাপাশি তাঁদের সমস্ত রকম দলীয় কর্মসূচি থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষোভের সঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রীর ঘোষণা, “চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন বিধায়ক। তিনি সিপিএম (CPM) ও কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে আঁতাত করে যেভাবে কার্যকলাপ করছেন তাতে দলের ভয়ংকর ক্ষতি হচ্ছে। সর্বোপরি দল ও কর্মীদের অপমান করা হচ্ছে।” ওই দলে জলঙ্গি উত্তর জোনের সভাপতি বিষ্ণু সরকারকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। শাওনিদেবী বলেন, “দলকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব না দিয়ে সভাপতি বিষ্ণু সরকার যেভাবে প্রতিটি জায়গায় সিপিএম ও কংগ্রেসকে সুযোগ করে দিয়েছেন। সেটা মেনে নেওয়া যায় না।” বারবার সতর্ক করা সত্বেও তাঁরা দলের কথা শোনেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য।
দলীয় কাজ থেকে বিরত রাখা ও শোকজের চিঠি পৌঁছে যাবে খবরের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল বলেন, “কারণ জানতে চাইলে অবশ্যই জানাব, অসুবিধা কোথায়? তবে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে এটাও বলব, জলঙ্গি দক্ষিণ চক্রে অশ্বমেধের ঘোড়া ছেড়ে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নালিশ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।” এরপরই বিধায়ক বলেন, “রাজনীতিতে শেষ কথা বলে জনগণ। আমি জনগণের সঙ্গে আছি। বিষয়গুলি আমিও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তুলে ধরব।” এভাবেই জলঙ্গিতে বিধায়ক বনাম জেলার সভানেত্রীর মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দোল প্রকাশ্যে চলে এল বলে মনে করছেন জলঙ্গির মানুষ। অনেকে আবার বলেন অনেক আগেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.