সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: জাতীয় সড়কে হাতির তাণ্ডবের পর এবার বাঁদরের উৎপাতে জেরবার। বিধায়ককে কামড় দেওয়ার পর এলাকার বেশ কয়েক জনকে কামড়েছে বাঁদরটি। স্থানীয়দের দাবি, বাঁদরটি পাগল হয়ে গিয়েছে। তাই কারণে অকারণে মানুষ দেখলেই কামড়াচ্ছে, তেড়ে যাচ্ছে। রীতিমতো এক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে ঝাড়গ্রামে। গত কয়েক দিন বাঁদরের এই তাণ্ডব চলছে ঝাড়গ্রাম ব্লকের লোধাশুলি জাতীয় সড়ক এবং সংলগ্ন এলাকায়। বনদপ্তর বাঁদরটিকে ধরতে খাঁচা পাতলেও তাতে ধরা দিচ্ছে না চালাক পশুটি। কলা বা অন্যান্য খাবার দিলেও খাঁচার ভিতরে কিছুতেই ঢুকছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খাবার দেখলে বাঁদরটি এগিয়ে এসে নিচ্ছে। কিন্তু কখনও আবার খাবার নিয়ে কামড়ও দিচ্ছে। আবার কখনও সাধারণ মানুষের উপর ঝাঁপ দিয়ে কামড় দিচ্ছে। এদিন বৃহস্পতিবার লোধাশুলির তহিদুল শেখ(৩০) নামে এক রুটি হকারের গায়ে ঝাঁপ দিয়ে এমন ভাবে কানে কামড়ায় যে কান ছিঁড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। আবার বেকারির কারিগর শেখ মুসলেম (৫৫) নামে এক ব্যক্তির গায়ে ঝাঁপিয়ে কোমরে কামড় দেয়।
বুধবার সকালে গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক চূড়ামণি মাহাতোর হাতে কামড় দেয় বাঁদরটি। চূড়ামণিবাবু জানান, “লোধাশুলি মোড়ে অনেকেই বাঁদরটিকে খেতে দিচ্ছিল। ভাবলাম আমিও খেতে দিই। এক টুকরো কেক হাতে খাওয়াতে গিয়েছিলাম। তখন হঠাৎ আমার হাতে কামড় দেয়। শুধু আমাকে নয়, ওই বাঁদরটা অনেকই কামড়াচ্ছে। এদিনও কয়েক জনকে কামড়েছে। আমি ডাক্তার দেখিয়ে ইঞ্জেকশন নিয়েছি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছে, অবিলম্বে বাঁদরটিকে ধরার ব্যবস্থা করুক বনদপ্তর। এদিকে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে বাঁদরটিকে ধরতে বুধবারই ওই এলাকায় খাঁচা বসানো হয়। ধূর্ত বাঁদরটি খাবার দিলে বাইরে খাচ্ছে। কিন্তু খাঁচার ভিতরে ঢুচ্ছে না। আর বাঁদরের তাণ্ডবে আতঙ্কে রয়েছেন লোধাশুলি এলাকার বিভিন্ন দোকানের মালিক, কর্মচারী, বাসের চালক, খালাসি, বাসের যাত্রীরাও।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগেও লোধাশুলিতে জাতীয় সড়কে হাতি উঠে প্রায় দু’ঘন্টা ধরে তাণ্ডব করেছিল। এবার আবার বাঁদরের উৎপাত। খাবার পেলেও কামড় দিচ্ছে বাঁদরটি। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্ছি বলেন, “বাঁদরটিকে ধরার জন্য আমরা ওই এলাকায় একটি খাঁচা পেতেছি। আমরা নজর রাখছি। চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে বাঁদরটি খাঁচায় ঢোকে।”
ছবি: প্রতীম মৈত্র
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.