ছবি: অমিত সিং দেও
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দলীয় কাজে যাওয়ার সময় তৃণমূল বিধায়ককে গাড়ি থেকে নামিয়ে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। পুরুলিয়ার পাড়া বিধানসভাকেন্দ্রের বিধায়ক উমাপদ বাউরি নিজের গাড়ি চেপে দলীয় কাজে মৌতোড়-মঙ্গলদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যাচ্ছিলেন। সেইসময় গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁকে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ। পুরুলিয়া জেলা বিজেপির অবশ্য পালটা দাবি, রঘুনাথপুর দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির দলের জয়ী সদস্য কালীচরণ বাউরিকে ‘টাকা’ দিয়ে কিনতে এসেছিলেন শাসকদলের বিধায়ক। দলের কর্মীরা প্রতিবাদ করেছিলেন। তাঁকে হেনস্তার অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিরোধীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল বিধায়ক উমাপদ বাউরি।
[গেরুয়ার বদলে শিবভক্তদের পরনে নীল-সাদা পোশাক, জোর বিতর্ক বর্ধমানে]
এদিকে বিধায়ককে হেনস্তার ঘটনার ভিডিও আবার ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ এক মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ঘুরছে হোয়াটসঅ্যাপে, ফেসবুকেও। নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ওই ভিডিও। ওই ভিডিওতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, একদল যুবক বিধায়ক উমাপদ বাউড়িকে আঙুল দেখিয়ে শাসাচ্ছে। শুধু তাই নয়, রীতিমতো ধাক্কা দিয়ে তাঁকে রঘুনাথপুর এক নম্বর ব্লকের মৌতোড়-মঙ্গলদা গ্রাম পঞ্চায়েতের খাটরা কালিমন্দিরে ঢোকানো হয়। ওই অবস্থায় খানিকটা হতভম্ব হয়ে যান শাসকদলের জনপ্রতিনিধি। একদল যুবককে এও বলতে শোনা যায়, ‘আপনার পুলিশকে ডাকুন। আমাদের লোককে কিনতে এসেছেন?’ দলের কাজে গিয়েছিলেন। তাই ঘটনার সময়ে বিধায়কের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীও ছিল না। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। রবিবার রাতেই রঘুনাথপুর থানা অভিযোগ দায়ের করেন বিধায়ক উমাপদ বাউড়ি। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি ওই এলাকা দিয়ে দলীয় কাজে যাচ্ছিলাম। গাড়ি থেকে নামিয়ে আমাকে মারধর করেছে একদল বিজেপি কর্মী।’ এদিকে এই ঘটনায় আবার আক্রান্ত বিধায়কেই পালটা দোষারোপ করেছে পুরুলিয়া জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।
পুরুলিয়ার পাড়ার বিধানসভাকেন্দ্রেরই অন্তর্গত রঘুনাথপুর দু’নম্বর ব্লক৷ পঞ্চায়েত সমিতিটি ছিল তৃণমূলের দখলে। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে রঘুনাথপুর দু’নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতি বোর্ড গড়েছে বিজেপি৷ ১৬টি আসনে জিতেছে বিরোধী দলের প্রার্থীরা৷ ১৩টি আসন পেয়েছে শাসকদল৷ বিজেপির অভিযোগ, দলের জয়ী সদস্যদের টাকা দিতে কিনতেই রঘুনাথপুরে গিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক উমাপদ বাউড়ি৷ দলে জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, “নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকেই তৃণমূল এই জঘন্য কাজ করে যাচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েত তো বটেই, পঞ্চায়েত সমিতিতেও বোর্ড গঠন করতে কখনও টাকা ছড়াচ্ছে, কখনও আবার ভয় দেখাচ্ছে। এমনকী, বিরোধীদের জয়ী প্রার্থীদের অপহরণও করে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শাসকদলের চেষ্টা সফল হচ্ছে না। এর আগেও আমাদের কর্মীরা রুখে দিয়েছেন। এদিনও তাই হল। সাধারণ মানুষ সব দেখছেন। পঞ্চায়েতের মত লোকসভা ভোটে আবার জবাব দেবেন।” কিন্তু পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তাঁদের বিধায়ককে পরিকল্পিত ভাবে হামলার ছক কষেছিলেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। দলের পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, “বিজেপি একেবারে পরিকল্পনা করে আমাদের বিধায়ককে হামলা করেছে। আমি পুলিশকে বলেছি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.