অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: পিংলা থেকে সন্দেশখালির ভৌগোলিক দূরত্ব ১৮০ কিলোমিটার। নিমেষে সেই দূরত্ব ‘মুছে’ দিল এক নাম বিভ্রাট। জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি। মারমুখী মহিলাদের হাত থেকে বাঁচতে সিভিকের ঘরে লুকিয়েছেন। রাতভর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছেন। গ্রেপ্তারও হয়েছেন। আর লাগাতার ফোন গিয়েছে পিংলার অসুস্থ বিধায়ক অজিত মাইতির কাছে। সকলের উদ্বেগ একটাই, “দাদা আপনি ঠিক আছেন?” সন্দেশখালি কাণ্ডের মাঝে নাম বিড়ম্বনায় নাজেহাল তিনি। অসুস্থ অবস্থায়ও বারবার ফোন ধরছেন, আশ্বস্ত করেছেন, “ওই অজিত মাইতি আমি নই। আমি কখনও সন্দেশখালি যাইনি। আমি কখনও অঞ্চল সভাপতি ছিলাম না। আমি ওই অজিত মাইতিকে চিনতামই না।”
সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শেখ শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজউদ্দিনের পর অঞ্চল সভাপতির পদ পান অজিত মাইতি। অভিযোগ, শাহজাহানের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে সন্দেশখালির বেড়মজুর এলাকায় একের পর এক জমি লুট করে গিয়েছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভয় দেখিয়ে অনৈতিক কাজকর্ম করতেন। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। গত শুক্রবার উত্তপ্ত সন্দেশখালিতে স্থানীয় মহিলাদের রোষের মুখে পড়েন অজিত মাইতি। লাঠি, ঝাঁটা হাতে রণংদেহী মহিলারা কার্যত তাঁকে ঘিরে ধরেন। তাঁর বাড়ির একাংশে আগুন লাগিয়ে দেয়। তাঁকে জুতোপেটাও করা হয়। ইটবৃষ্টি হয়। তবে সেদিন পালিয়ে কোনওক্রমে রক্ষা পান তৃণমূল নেতা। সোমবার কাকভোরে গ্রেপ্তার হন তিনি।
এদিকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পিংলার বিধায়ক। গত কয়েকদিন ধরে তাঁর মোবাইলে ফোনের বন্যা। সকলের প্রশ্ন, “দাদা আপনি ঠিক আছেন?” শুধু তাই নয়, ‘ঘোলা জলে মাছ ধরা’র মতো সোশাল মিডিয়ায় তৃণমূল বিধায়ককে নিয়ে ‘অপপ্রচার’ শুরু হয়। কোথাও কোথাও তো বলে দেওয়া হয় পিংলার বিধায়ক গ্রেপ্তার হয়েছেন। এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার আর্জি জানান বিধায়কের অনুগামীরা। তবে সে পথে হাঁটেননি অজিত মাইতি। তাঁর কথায়, “মানুষ এমনিই বুঝবে। কে ঠিক, কে ভুল!” সবমিলিয়ে নামবিভ্রাটে জেরবার তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.