Advertisement
Advertisement

Breaking News

রাম মন্দির

তৃণমূলের ‘রামনাম’, বর্ধমানের ভাতশালায় মন্দির পুনর্নির্মাণ করাচ্ছেন রাজ্যের মন্ত্রী

রাম মন্দির পুনর্নির্মাণের সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই, দাবি তৃণমূলের।

TMC minister restructuring Ram Temple in West Bengal
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:September 1, 2019 9:06 pm
  • Updated:September 1, 2019 9:09 pm  

রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: ইতিহাস বলছে এক সময় গ্রামে ছিল বিশাল রাম সীতার-মন্দির। কালের নিয়মে তা আজ ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। এবার সেই হারানো ইতিহাসকে ফিরিয়ে আনতে রাম-সীতার মন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নিলেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ। পূর্বস্থলির জাহান্নগরের ভাতশালাতে নিজের টাকা খরচ করে এই মন্দির গড়ে দিচ্ছেন মন্ত্রী। রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেই মন্দিরের শিলান্যাসও করেন স্বপনবাবু। এই নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোরও শুরু হয়েছে।

[আরও পড়ুন:  অশান্ত কাঁকিনাড়ায় মাথা ফাটল অর্জুন সিংয়ের, কাঠগড়ায় পুলিশ কমিশনার]

রবিবার সকালে পূর্বস্থলির ভাতশালাতে যান মন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন পূর্বস্থলী ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক, পূর্বস্থলি ২ নং পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তপন চট্টোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্ট জনেরা। জানা গিয়েছে, এই এলাকায় একাধিক ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন ছিল একসময়। ভাতশালা গ্রামে রাম-সীতার মন্দির ছিল, ছিল মহাবীরের মন্দিরও। ইতিহাস বলছে, একসময় বর্গীদের আক্রমণে লুণ্ঠিত হয় পূর্বস্থলির বহু গ্রাম। তার মধ্যে ভাতশালা ছিল অন্যতম। মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল রচিত বৃহত্তর পূর্বস্থলীর ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে, এই গ্রামের মন্দিরে, রাম-সীতা-লক্ষণ এবং মহাবীরের মূর্তি প্রতিষ্ঠিত ছিল। এই এলাকায় আরও অনেক প্রাচীন স্থাপত্য ও ঐতিহাসিক নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে।
সেই সূত্র ধরেই, এলাকার নানা পুরনো মন্দির সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। এর আগেও নানা মন্দির ও প্রাচীন স্থাপত্য সংস্কার করেছেন মন্ত্রী। পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেইমতোই এবার এই ভাতশালায় রাম-সীতা মন্দির গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হল। প্রাচীন আমলের রাম-সীতার ছবিও জোগাড় করা হয়েছে। সেই আদলেই মূর্তি তৈরি হবে। এক বছরের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে স্বপনবাবুর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন এলাকার ব্যানারও টাঙানো হয়েছে। তৃণমূল নেতার রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে অবশ্য রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। বিজেপির জয় শ্রীরামের চাপে পড়েই এখন তৃণমূলের রামের হাত ধরতে চাইছে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত শ্যামনগর, সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গাড়ি ভাঙচুর]

বিজেপির দাবি, রাজনীতি করছে তৃণমূল। তবে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। এলাকার ইতিহাসকে ফিরিয়ে আনার জন্যই এই উদ্যোগ। যা আমি পাঁচ বছর আগেই নিয়েছি।” তিনি আরও জানান, একসময় এই গ্রামেই ছিল ইতিহাসের নানা ঐতিহ্য। কিন্তু বর্গীদের আক্রমণে পূর্বস্থলীর জুড়ে থাকা নানা ঐতিহ্য ধ্বংস হয়েছিল। ফলে সমস্ত কিছুই এখন বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। এই ভাতশালাতেও নানা ঐতিহ্য ছিল। যা আর দেখা যায় না। মোগল আমলে সৈনিকরা এই গ্রামে বসবাস করার সুবাদেই নাকি এই গ্রামে রাম-সীতা-লক্ষণ ও মহাবীরের মন্দির তৈরি হয়েছিল। কবি গঙ্গারামের মহারাষ্ট্র পুরাণ ও মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের ‘বৃহত্তর পূর্বস্থলীর ইতিহাস’ সেই সমস্ত কিছুর উল্লেখ আছে। তাই ইতিহাসের সেই মন্দির গুলিকেও আবার পুনর্নির্মাণ করতে চলেছেন মন্ত্রী। বিজেপির বর্ধমান পূর্বের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, “কিছুদিন আগে ওরা রামনামকে গালাগালি করত। এখন তারাই রামের শরণ নিচ্ছে। এটা আদতে ভেক। এতে কোনও রাজনৈতিক লাভ হবে না।”

ছবি: মোহন সাহা

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement