সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: প্রচার, মিটিং, মিছিলের মাঝে অন্য মেজাজে ধরা দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। প্রতিবেশী রাজ্যের বিজেপি সমর্থকের পরিবারের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজন সারলেন ওই তৃণমূল প্রার্থী। আহার শেষে বিলও মিটিয়ে দিলেন খোদ প্রার্থী। প্রচারের ফাঁকে উঠে এল প্রার্থীর এক অন্য ছবি।
জানা গিয়েছে, প্রচারের ফাঁকে শনিবার দুর্গাপুরের একটি হোটেলে মধ্যাহ্নভোজন করতে যান বর্ধমান–দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা চৌধুরি। সঙ্গে ছিলেন তার দেহরক্ষী ও কর্মীরা। প্রার্থীর টেবিলের একটু দুরেই পরিবার নিয়ে খেতে বসেছিলেন ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি জিতেন্দ্র কুমার। তৃণমূল প্রার্থীর আচরণ ও তাঁকে ঘিরে রাখা কর্মী ও দেহরক্ষীদের দেখে তিনি মনে করেন উনি বিজেপির প্রার্থী। উঠে এসে পরিচয় করেন। পরিচয় পর্ব সারা হতেই প্রার্থী নিজের সঙ্গে তাঁকে মধ্যাহ্নভোজন করতে বলেন। জিতেন্দ্রবাবু তাঁর পরিবারকে নিয়ে মমতাজ সংঘমিতার সঙ্গে সপরিবারে খেতে বসেন। তৃণমূল প্রার্থী নিজের হাতে পোস্ত পরিবেশন করেন জিতেন্দ্রবাবু-সহ তাঁর পরিবারকে। আহার পর্বের মাঝেই ভুল ভাঙে জিতেন্দ্রবাবুর। প্রার্থীর পোশাক ও দলীয় প্রতীক দেখে তিনি বুঝতে পারেন বিজেপির নয়, শাসকদলের প্রার্থী ওই মহিলা। ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমাও চেয়ে নেন ওই বিজেপি কর্মী।
মমতাজ সংঘমিতা চৌধুরি বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক, একসঙ্গে বসে খাওয়া তো অন্যায় নয়।’ একথা বলে ওই ব্যক্তিকে ধমকও দেন মমতাজ সংঘমিতা। এরপর খাওয়া শেষে জিতেন্দ্রবাবুর ও তাঁর পরিবারের বিলও মিটিয়ে দেন প্রার্থী। মমতাজ সংঘমিতা জানান, “উনি আমাদের অতিথি। তাকে সেবা করাই আমাদের ধর্ম।” এরপর নিজেদের মধ্যে ফোন নম্বরও আদান প্রদান করেন তাঁরা। কোন সমস্যা হলে জিতেন্দ্রবাবুকে যোগাযোগ করারও নির্দেশ দেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা চৌধুরি। আপ্লুত জিতেন্দ্রকুমার বলেন, “বিজেপির প্রার্থী ভেবেই পরিচয় করেছিলাম। বিজেপি কর্মী হিসেবেই নিজের পরিচয়ও দিয়েছি। কিন্তু তারপরও তৃণমূল নেত্রীর ব্যবহার দেখে আমি ও আমার পরিবার বিস্মিত। রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও প্রার্থীকে শুভেচ্ছা জানান জিতেন্দ্রবাবু।’’
ছবি: উদয়ন গুহরায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.