Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিজেপি

মমতার আন্দোলনের সিঙ্গুরেই ফুটল পদ্মফুল, ধাক্কা তৃণমূলের

শিল্প আনার প্রতিশ্রুতিতে শাসককে মাত দিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়৷

TMC lost in Singur Bidhansava seat against BJP's Locket Chatterjee
Published by: Tanujit Das
  • Posted:May 25, 2019 11:45 am
  • Updated:May 25, 2019 12:07 pm  

নব্যেন্দু হাজরা: কেউ কথা রাখেনি। রাখলে এই ফল হত না। শুক্রবার বিকেলে চুঁচুড়া ঘড়ির মোড়ের চায়ের দোকানে বসে কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। বললেন, “বামেদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর হুগলি জেলা ছিল ঘাসফুলের দুর্গ। সেখানেই এই ফল! ভাবতেই পারছি না। তৃণমূলের লোকই কথা রাখেনি। রাখলে বিজেপি এত ভোট পায় না।” হুগলি লোকসভার ফলাফল বেরনোর পরই এখানে শুকিয়ে গিয়েছে ঘাসফুলের বাগান। যে সিঙ্গুর রাজ্যে পালাবদলে তৃণমূলের পায়ের তলায় জমি শক্ত করেছিল, সেখানেই এবার বিজেপি প্রায় ১১ হাজার ভোটে লিড করেছে। তাছাড়া বলাগড়, পাণ্ডুয়া, চুঁচুড়া, আদি সপ্তগ্রামের মতো বিধানসভাগুলোও এবার শাসক দলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর এটাই ভাবাচ্ছে শাসক দলকে।

[ আরও পড়ুন: জেলার দুটি আসনেই জিতেছে দল, কিন্তু নিজের ওয়ার্ডেই হারলেন অনুব্রত ]

Advertisement

ভোটে দাঁড়ানোর পরই একাধিকবার সিঙ্গুরে ঘুরেছেন বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। বলেছেন, জিতলে ফের সিঙ্গুরে শিল্প নিয়ে আসবেন। তার এই কথায় যে কাজে লেগেছে, তা বোঝা যাচ্ছে সিঙ্গুরের ফলাফলেই। রাজনৈতিক মহলের মতে, সিঙ্গুরে বামেরা শিল্প করতে চেয়েছিল। আর ভোটের আগে শিল্পের কথা বলে সেই বাম ভোটটাকেই নিজের দিকে টানতে চেয়েছেন লকেট। ফলাফলে পরিষ্কার তাতে সফলও হয়েছেন তিনি। তৃণমূলের শক্ত জমি আলগা হয়ে গিয়েছে এখানে। আর শাসকের সেই আলগা জমিতেই ফের শিল্পের কথা তুলে ধরা শুরু করেছে বিজেপি। লকেট জানাচ্ছেন, সিঙ্গুরে ফের শিল্প ফিরিয়ে আনবেন তিনি। এবারই সিঙ্গুরে ভোটের দায়িত্ব মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে বেচারাম মান্নার হাতে দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু তাতে যে বিশেষ লাভ হয়নি তা ফলাফলেই স্পষ্ট। বিজেপি-র চোরাস্রোতে ভেসে গিয়েছে ফুলের বাগান। চুঁচুড়া, বলাগড়, পাণ্ডুয়া, আদি সপ্তগ্রামে একই অবস্থা। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই শিল্পের দাবিতে সরব হলেন সিঙ্গুরের চাষিরা। শুক্রবার বিজেপির ছত্রছায়ায় সিঙ্গুরের চাষিরা নতুন করে শিল্পের দাবিতে টাটা প্রকল্পের জমির মধ্যে বিক্ষোভ মিছিল করেন। সিঙ্গুর এলাকার বহু চাষি এদিন এই বিক্ষোভ মিছিলে শামিল হন।

যে আসনে গত লোকসভাতেও প্রায় দু’লক্ষের কাছাকাছি ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী ড. রত্না দে নাগ। সেখানেই এবার প্রায় ৭২ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত তিনি। চন্দননগর এবং ধনেখালি ছাড়া আর বাকি পাঁচ বিধানসভাতেই হেরেছে তৃণমূল। যা নিয়ে আশঙ্কার কালো মেঘ দেখছে জেলা নেতৃত্ব। আজ কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে দলীয় বৈঠকের পর জেলাস্তরের ফাকফোঁকর খুঁজে বের করতে নামবে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। চন্দননগর থেকে তৃণমূল প্রার্থী ২৮৭৭ ভোটে লিড পয়েছেন ঠিকই কিন্তু পুরসভার ১১টি ওয়ার্ডে হেরেছে শাসকদল। জিতেছে ২২টিতে। আর ধনেখালি থেকে ১২ হাজারের মতো ভোটে লিড পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। ব্যস! বাকি সব জায়গাতেই ঘাসফুলের বাগানে প্রবেশ ঘটেছে পদ্মের। বাম ভোট রামে যাওয়ার থেকেও দলের অনেক নেতাই মনে করছেন সাবোতাজ করেছেন বিক্ষুব্ধরা। না হলে এই বিপুল ভোট বিজেপি পাওয়ার কথা নয়। তাই কোথায় কোথায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তা খুঁজে বের করছে দলীয় নেতৃত্ব।

[ আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে ভরাডুবি তৃণমূলের, জেলা নেতৃত্বের ভূমিকায় দলের অন্দরে অসন্তোষ]

রাজ্যের শাসক দলের পিছিয়ে থাকার ব্যবধান কোথাও একটু কম। কোথাও অনেকটা। তৃণমূলের সংগঠন যে আরামবাগেও কাজ করেনি, তাও স্পষ্ট। তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার জিতলেও গত লোকসভার তিন লাখের ব্যবধান কমে কোনওক্রমে সিট ধরে রেখেছেন। ফলে একদা ঘাসফুলের গড় নিয়ে বেশ চিন্তায় শাসক দল। হুগলির তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, “দলের ফল কেন খারাপ হল, তা দেখা হচ্ছে। ভুল-ত্রুটি কিছু থাকলে অবশ্যই শুধরে নেওয়া হবে। তবে বামের ভোট রামে যাওয়াতেই বিজেপির এই ফল।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement