কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: সাগরদিঘিতে ধাক্কা খেল তৃণমূল (TMC)। আর কংগ্রেস (Congress) শিবিরে অক্সিজেন জুগিয়ে বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার ১৬ রাউন্ড গণনা শেষে বায়রন বিশ্বাসকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। শাসকদলের পাশাপাশি এই উপনির্বাচনে ধাক্কা গেরুয়া শিবিরেরও। অনেক পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে বিজেপি (BJP)। আগের নির্বাচনে তারা দ্বিতীয় স্থান দখল করেছিল। কংগ্রেসের এই জয়ের পরই উচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে হাতশিবিরে।
রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার প্রয়াণে সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন (Sagardighi By election) হয়েছে গত সোমবার। তৃণমূলের তরফে প্রথমে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের নাম ভাসলেও শেষ পর্যন্ত দেবাশিস বন্দ্য়োপাধ্যায়কে প্রার্থীপদে দাঁড় করানো হয়। বামেরা এবার প্রার্থী দেয়নি। কংগ্রেসের প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসকেই সমর্থন দিয়েছিলেন বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমরা। আর সেই প্রার্থীই তৃণমূল, বিজেপিকে পরাস্ত করে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলল নিঃসন্দেহে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বায়রন বিশ্বাস তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়েছেন ২২,৯৮০ ভোটে। দ্বিতীয় স্থানে তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্য়োপাধ্যায়, তৃতীয় বিজেপির দিলীপ সাহা। তাঁরই ভোটপ্রাপ্তি সবচেয়ে কম। যা গেরুয়া শিবিরের পক্ষে বড় ধাক্কা, তা বলাই বাহুল্য।
সাগরদিঘির ফলাফল নিয়ে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া,
”এই ফলাফল প্রমাণ করে, কংগ্রেস এখনও ফুরিয়ে যায়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাজিত নন। মানুষ নিরপেক্ষভাবে ভোট দিতে পেরেছেন। এর জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ধন্যবাদ।” যদিও তৃণমূল বায়রন বিশ্বাসের এই জয়কে ‘অনৈতিক’ বলে মনে করছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের প্রতিক্রিয়া, ”নীতি-আদর্শহীন অনৈতিক জোট। তার আবার জয়!”
কিন্তু সাগরদিঘি উপনির্বাচনের আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে গিয়ে প্রচার করেছেন। বায়রন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে তাঁকে নির্বাচনী লড়াই থেকে হঠিয়ে দেওয়ার আবেদন জানান। নিজেদের জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি নিজে এবং ঘাসফুল শিবিরের প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ভোটযুদ্ধে তো জনতাই জনার্দন। তাঁদের বিচারে জয়ী হলেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। তাঁর এই জয়ের নেপথ্যে সংখ্যালঘু ভোট ফ্যাক্টর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এই বিধানসভা কেন্দ্রটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.