জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: সীমান্ত এলাকা বাগদায় রাতের অন্ধকারে সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলে মাকে গণধর্ষণের মতো ঘটনায় ২ বিএসএফ (BSF) জওয়ান জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় উত্তাল গোটা রাজ্য। রক্ষীদের হাতে আমজনতাকে এভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভের পারদ চড়ছেই। ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার বাগদায় গেল তৃণমূল (TMC)প্রতিনিধিদল। ছিলেন মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)-সহ আরও অনেকেই। যে জায়গায় সেদিন ঘটনা ঘটেছিল, সেই জায়গা ঘুরে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন শশী পাঁজা, কুণাল ঘোষরা। বাগদায় প্রতিবাদ সভা থেকে বিএসএফকে নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। বুঝিয়েছেন, নারী নিরাপত্তার সঙ্গে একচুল আপোসেও রাজি নন। ন্যায়ের জন্য দীর্ঘ লড়াই করতে প্রস্তুত।
‘মহিলাদের উপর অত্যাচারকারীরা দেবীর পুজো করেন না’, এভাবেই বিএসএফ জওয়ানদের উপর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন শশী পাঁজা (Shashi Panja)। এদিন বাগদা (Bagda)পৌঁছে তিনি সেই গ্রামে চলে যান, যেখানে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। সেখানকার স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন। নিরাপত্তা নিয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করেন।
সেখানে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ”বর্ডার পারাপার হয় এখানে। তার শাস্তি অন্য। কিন্তু সীমান্ত পেরনোর জন্য কাউকে গৃহবধূকে ধর্ষিত হতে হবে, এ কী কথা? এটা কি কোনও শাস্তি? বিএসএফের সঙ্গে অনেক সময় গ্রামের মহিলাদের শারীরিকভাবে আপোষ করতে হয়। আমাদের নজরে এসেছে আরও অনেক কিছুই। এসবের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবেই। মেয়েদের জন্য ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প করা দিদি জানেন, কীভাবে মেয়েদের রক্ষা করতে হয়।”
কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “বিএসএফের বিপক্ষে নই আমরা। তাঁরা তো সীমান্তের সুরক্ষায় নিয়োজিত। কিন্তু এই বিএসএফ জওয়ানরা যদি মা-বোনদের সঙ্গে অসভ্যতামি করে, তাহলে তো তার প্রতিবাদ করতেই হবে। এখানকার যা পরিস্থিতি, তাতে সন্ধে ৬ টার পর এখানে কোনও মহিলা বেরতে পারেন না বাইরে। তাঁরা ভয় পাচ্ছেন। বিএসএফের কাজের এক্তিয়ার ১৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করার কথা বলেছে কেন্দ্র, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। এমন ঘটনা ঘটলে ৫০ কিলোমিটার করার অর্থ কী? সুরক্ষাবৃদ্ধির বদলে সর্বনাশ ঘটবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.