বাবুল হক, মালদহ: নিয়ম বহির্ভূতভাবে তৃণমূল (TMC) নেতানেত্রীদের আত্মীয়দের রেশনের ডিলারশিপ পাইয়ে দেওয়া, আদালতের নির্দেশের পরও সেই পদে পুর্নর্নিয়োগ না করে তাঁদের দিয়েই কাজ চালানো, গ্রাহক হয়রানি মতো একাধিক অভিযোগে নতুন করে উত্তপ্ত মালদহের (Maldah) রতুয়া। রেশন দুর্নীতিতে রাজ্য জুড়ে ইডির তল্লাশির মাঝে রতুয়ার ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। যদিও জেলা খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের আধিকারিকের দাবি, উচ্চ আদালতের নির্দেশমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার সূত্রপাত সেই গত বছর। ২০২২ সালে ৩ এপ্রিল রতুয়া-১ নম্বর ব্লকের বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতে সাহাপুর এলাকায় রেশন ডিলারশিপের জন্য আবেদনপত্র চাওয়া হয় খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের তরফ থেকে। ২৪ এপ্রিল আবেদন করার শেষ দিন ধার্য করা হয়। শেখ আতাউর নামে এক যুবক রেশন ডিলারশিপের (Dealarship) জন্য আবেদন করেন। তাঁর অভিযোগ, ২৪ এপ্রিল আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন থাকলেও ২৮ এপ্রিল রেশন ডিলারশিপের জন্য আবেদন করেন রতুয়া-১ (Rotua)নম্বর ব্লক মহিলা তৃণমূল সভানেত্রী রুকসানা পারভীনের স্বামী আফসার আলি এবং জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সির আত্মীয়। আফসার আলি এই ডিলারশিপ পান।
তা জানতে পেরে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ হন শেখ আতাউর। সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁর পক্ষে রায় দিলেও সেই রায়কে কার্যকর করতে বিলম্ব করে জেলা খাদ্য দপ্তর বলে অভিযোগ। এর পর তৃণমূল নেত্রীর স্বামী পালটা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। ডিভিশন বেঞ্চ সেই রায় বহাল রাখে। সেখানে দুমাসের মধ্যে সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে কার্যকর করার নির্দেশ দেন। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও সেই রায় কার্যকর করতে বিলম্ব করছে খাদ্যদপ্তর। এমনকী নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রভাবশালীকে রেশন ডিলারশিপ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে আফসার আলিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও উত্তর দিতে চাননি।
জেলা খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের আধিকারিক মাণিক সরকার বলেন, ”উচ্চ আদালতের নির্দেশের কপি আমরা হাতে পেয়েছি। আদালত যা দিয়েছে তা কার্যকরী করা হবে।” মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ (BJP MP) খগেন মুর্মু বলেন, ”তৃণমূলের সব কিছুতেই দুর্নীতি আছে। একাধিক নেতা জেলে আছে, বাকিদেরও জেলে যাওয়া উচিত।” এই বিষয়ে মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, ”এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। আদালত যা নির্দেশ দিয়েছে খাদ্যদপ্তরের আধিকারিকরা সেই নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.