ধীমান রায়, কাটোয়া: এলাকা দখলের লড়াই ঘিরে উত্তপ্ত মঙ্গলকোট। শুক্রবার রাতে স্থানীয় দুই তৃণমূল নেতার বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে৷ মারধর করা হয় শাসকদলের ওই দুই নেতাকে৷ তাদের বাড়ি লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় বোমাও৷ শাসকদলের অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা আগে সিপিএমের ছত্রছায়ায় ছিল, তবে বর্তমানে এরা বিজেপির আশ্রয়ে রয়েছে৷ যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি৷ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ৷ এলাকায় বসেছে পুলিশ পিকেট৷
[ আরও পড়ুন: মুসলিম নুসরতের কপালে কেন সিঁদুর, বিবাদে জড়ালেন মৌলবী ও সাধ্বী প্রাচী]
জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থল মঙ্গলকোটের পাশাপাশি দুই গ্রাম সাকোনা ও নোয়াপাড়া। শুক্রবার রাত ন’টা নাগাদ একদল দুষ্কৃতী বোমা, বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় ঝিলু-২ পঞ্চায়েতের সাকোনা গ্রামের তৃণমূল নেতা মুন্সি হায়দার আলির বাড়িতে৷ হামলা চালানো হয় ওই পঞ্চায়েতেরই ৩ নম্বর সংসদের সুপারভাইজার রবিউল শেখের উপরও৷ মুন্সি হায়দার আলির বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করা হয়৷ বাড়ি লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় গুলি ও বোমা৷ মুন্সি হায়দর জানান, ‘‘আমরা ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে কোনও রকমে প্রাণ বাঁচাই।” ঘটনায় আতঙ্কিত রবিউল শেখও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দুষ্কৃতীরা আমাদের বাড়িতে এসে দু’লক্ষ টাকা দাবি করে। দু’দিনের মধ্যে টাকা না দিলে, প্রাণে মারার হুমকি দেয়। তারপর বাড়িতে এলোপাথাড়ি বোমাবাজি করে। বোমার আঘাতে আমার ভাইপো হামিদুর আহত হয়েছে। দুটি বাইক ভেঙেছে দুষ্কৃতীরা।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে বেশ কিছুক্ষণ ধরে সাকোনা ও নোয়াপাড়া গ্রাম দাপিয়েছে দুষ্কৃতী দল। এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি করা হয় ও এলোপাথাড়ি গুলি চালান হয়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এবং পুলিশের তাড়া খেয়ে দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। অভিযোগ, এরপর সারারাত ধরেই গ্রামের বাইরে বিক্ষিপ্ত বোমাবাজি চলতে। শনিবার সকালে মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ দায়ের করে আক্রান্ত দুই পরিবার। কাটোয়ার পুলিশ আধিকারিক ত্রিদিব সরকার জানান, ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
[ আরও পড়ুন: কাটমানি ইস্যুতে এবার সোনামুখির পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে পোস্টার বিজেপির ]
এই হামলার পিছনে বিজেপির ষড়যন্ত্র দেখছে তৃণমূল৷ মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরি বলেন, ‘‘সিপিএমের দুষ্কৃতীরা এখন বিজেপির ছত্রছায়ায় এসে, এলাকার দখল নিতে চাইছে। আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করছে। তবে সাধারণ মানুষ তার প্রতিরোধও করছেন।” অন্যদিকে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি বুদ্ধদেব মণ্ডল জানান, ‘‘ঘটনার পিছনে রয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। শাসকদলের একটি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন গ্রামছাড়া রয়েছে। তাদের সঙ্গেই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়েছে। বিজেপির সঙ্গে ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই।”
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.