অর্ণব দাস, বারাসত: বঙ্গের ভোটে তিন দফা সবে সম্পূর্ণ হয়েছে। এখনও বাকি ৫ দফা ভোট। তবে তারই মধ্যে প্রচারের পারদ চড়ছেই। ভোট চাইতে গিয়ে কেউ কেউ মুখের ভাষার লাগাম হারাচ্ছেন, কেউ আবার কার্যত হুঁশিয়ারির সুরেই বিশেষ রাজনৈতিক দলকে ভোট দিতে চাপ বাড়াচ্ছেন। এবার উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় তৃণমূল (TMC) প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন দলের নেতা শেখ মইনুদ্দিন। বললেন, ”তৃণমূলের পক্ষে যাঁরা ভোট দেবেন না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের প্রকল্প থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা হবে। স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী – সব বন্ধ করে দেওয়া হবে।” তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এলাকার সংযুক্ত মোর্চার আইএসএফ নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে স্বভাবতই সরব হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে আমডাঙার (Amdanga) তৃণমূল প্রার্থী রফিকুর রহমানের পথসভা ছিল এলাকায়। সেখানে তাঁর হয়ে প্রচার করছিলেন তৃণমূল নেতা শেখ মইনুদ্দিন। মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ”আমাদের বিধায়ক আছেন এখানে, নেতারাও আছেন। সকলের সামনেই বলছি, যাঁরা তৃণমূলকে ছেড়ে অন্য দলে ভোট দেবেন, তাঁদের আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করতে হবে। কোনও সরকারি সুবিধা মিলবে না। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড ব্লক করে দিতে হবে। রেশন নিতে গেলেও কার্ড ব্লক হবে। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাবে কিন্তু তাঁর হয়ে গাইবে না, সমর্থনও করবে না! ওসব চলবে না। বার্ধক্যভাতাও বন্ধ হবে।” তাঁর এদিনের হুঁশিয়ারিতে একাধিকবার উঠে এসেছে আইএসএফের নাম।
একুশের ভোটে তৃণমূলের জয় নিয়ে আশাবাদী শেখ মইনুদ্দিন কার্যত চ্যালেঞ্জের সুরেই বলেন, ”৯১টি আসনে ইতিমধ্যে নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। দায়িত্ব নিয়ে বলছি, সত্তরের বেশি আসনে জয়ী হবে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার আবার সরকার গড়বে। আর বাকি যে আসনগুলো আছে, সেসব আসনেই এবার হিসেব হবে।” এরপরই তাঁর হুঁশিয়ারি, আইএসএফ (ISF) করলে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হবে। এলাকার রাজনৈতিক চরিত্র বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, উত্তর ২৪ পরগনার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জায়গাগুলিতে সম্প্রতি ভিত তৈরি হচ্ছে আব্বাস সিদ্দিকির দল আইএসএফের। এবার রফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ভোটে লড়ছেন আইএসএফ প্রার্থী জামালউদ্দিন। তাঁর বিরুদ্ধেই জনমত সংগঠিত করতে শেখ মইনুদ্দিনের এই হুঁশিয়ারি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.