রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: রাজ্য সরকার চাইলেও, কেন্দ্রের ঘৃণ্য রাজনীতির জন্য উন্নয়ন স্তব্ধ হয়ে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে৷ কাঁথির একটি অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ তুলে বিজেপি বিরোধী প্রচারে নামলেন বিদায়ী সাংসদ শিশির অধিকারী৷ দেশের মেরুদণ্ডকে শক্তপোক্ত করার জন্য তৃণমূলের কোনও বিকল্প নেই বলেও দাবি তাঁর৷
শুক্রবার শিক্ষক সংগঠনের অনুষ্ঠানে তিনি এদিন আরও বলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের নেতৃত্বে পিছিয়ে পড়া গ্রামবাংলার মানুষ উন্নয়নের দিশা দেখেছেন৷ মাটি বা মোরামের রাস্তা আর নেই বললেই চলে। সবই এখন কংক্রিটের রাস্তায় পরিণত হয়েছে। আর যেগুলি বাকি রয়েছে, আগামিদিনে সেগুলিও কংক্রিটের রাস্তায় পরিণত হবে।’’ উন্নয়নের প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগে স্কুলে বাড়ির ছেলেমেয়েকে পড়ানোর জন্যে কতটা টাকা খরচ করতে হত, তা আপনারাই জানেন। আর এখন ছাত্রছাত্রীদের স্কুল থেকেই জুতো, মোজা, বই, ব্যাগ, সাইকেল-সহ মিডডে মিল দেওয়া হচ্ছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ নেই বললে চলে। সেইসঙ্গে রয়েছে কন্যাশ্রী। যা বিশ্বের দরবারে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। ইতিমধ্যেই সবুজসাথী-সহ রাজ্য সরকারের দুটি প্রকল্প বিশ্বসেরার পুরস্কার অর্জন করেছে।’’ রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলিকে হাতিয়ার করেই যে কাঁথিতে আরও একবার জনপ্রতিনিধির আসনটি পাকা করতে চাইছেন শিশির অধিকারী, বর্ষীয়ান নেতার বক্তব্যেই তা স্পষ্ট করেছেন৷ দিঘার পর্যটন বিকাশে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দিঘা থেকে পেটুয়াঘাট পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাজপুরে গড়ে উঠতে চলেছে গভীর সমুদ্র বন্দর। গভীর সমুদ্র বন্দর গড়ে উঠলে কর্মসংস্থান ঘটবে এই এলাকারই যুবকদের।’’
ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ তুলে এদিন বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন শিশির অধিকারী৷ গেরুয়া শিবিরকে খোঁচা দিয়ে তিনি অভিযোগ তুলেছেন, ‘‘নন্দীগ্রাম রেল পথ, দিঘা থেকে জলেশ্বর রেল পথ সংযোগের জন্যে চূড়ান্ত প্রস্তুতি হয়ে গিয়েছিল। কাজও শুরু হয়েছিল। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে সমস্ত কাজ স্তব্ধ হয়ে যায়। কেন পাঁচ বছরে দুটি রেল প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেল, প্রশ্ন করুন বিজেপির হয়ে যাঁরা ভোট চাইতে যাচ্ছেন। এই দুটি রেলপ্রকল্প চালু হলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উন্নয়ন একধাপে অনেক গুণ এগিয়ে যেত। কিন্তু বিজেপি চক্রান্ত করে আমাদের জেলাকে বঞ্চিত করেছে। তাই এই বিজেপি আর না।’’এনআরসি ইস্যুতেও তিনি বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি নামক একটি সাম্প্রদায়িক দলের কাজ হল এনআরসি করে বেছে বেছে নিজের দলের লোকেদের রেখে বাকিদের তাড়িয়ে দেওয়া। যা অসমে হয়েছে৷ বাংলাতেও করার পরিকল্পনা হচ্ছে। তাই বিজেপিকে উৎখাত করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করুন এবং উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে চলুন।’’
এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন সভাধিপতি দেবব্রত দাস, উওর কাঁথির বিধায়ক বনশ্রী মাইতি, প্রাথমিক সংসদের চেয়ারম্যান মানস দাস, শিক্ষক নেতা জয়ন্ত দাস, জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি হরিসাধন অধিকারী-সহ আরও অনেকে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.