সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাঁসখালি ধর্ষণ কাণ্ডে (Hanskhali Rape Case) জারি ধরপাকড়। গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য তথা মূল অভিযুক্তের বাবা সমরেন্দ্র গোয়ালিকে গ্রেপ্তার করল সিবিআই। গ্রেপ্তারির আগে বেশ কয়েকবার তাকে জেরাও করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এছাড়া এদিন সমরেন্দ্রর বন্ধু পীযূষ ভক্তকেও গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। প্রমাণ লোপাট ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।
এদিকে, শুক্রবার হাঁসখালি কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সোয়েল গোয়ালি ওরফে ব্রজ, প্রভাকর পোদ্দার, রঞ্জিত মল্লিক, আকাশ বাড়ই এবং দীপ্ত গোয়ালিকে রানাঘাট মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা জজ সুতপা সাহার এজলাসে তোলা হয়। এদিন সিবিআইয়ের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন প্রবুদ্ধ কুমার রাও এবং অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী ছিলেন রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, অপূর্ব বিশ্বাস ও বিশ্বজিৎ অধিকারী। তাদের আগামী ১৩ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ বিচারক।
এদিন আদালতে একাধিক প্রশ্ন তোলেন অভিযুক্তের আইনজীবী। তাঁর দাবি, ৪ মার্চ বিকেল চারটে নাগাদ সোয়েল গোয়ালির জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। রাত আটটা নাগাদ তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফেরে নাবালিকা। ভোর চারটে পর্যন্ত ওই নাবালিকা বাড়িতেই কষ্ট পাচ্ছিলেন বলে তার মাকে জানিয়েছিল। ভোর চারটে নাগাদ তার মৃত্যু হয়। এরপর পরদিন সকালে ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়া দেহ দাহ করা হয়েছিল। সেই সময় এফআইআরে নাবালিকার মা ওই এলাকার দুই বাসিন্দা অংশুমান বাগচি এবং পরিমল বিশ্বাস নামে দু’জন এবং তার স্বামীর উপস্থিতিতে দেহ দাহ করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই তিনজনকে সামনে আনা হয়নি কেন? দীর্ঘক্ষণ ধরে নাবালিকা বাড়িতে অসুস্থ থাকার সময় অত্যাচারের বিবরণ তার বাড়িতে জানায়নি? যদি জানিয়ে থাকে, তাহলে গণধর্ষণের দৃঢ় ধারণা বলে কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে কেন? ৫ মার্চ ঘটনা ঘটলেও এফআইআর করা হয়েছে ১০মার্চ। তারপর দু’দিন ধরে দু’জন মূল অভিযুক্ত সোয়েল গোয়ালি এবং প্রভাকর পোদ্দারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অথচ কোথাও হুমকির উল্লেখ ছিল না। কিন্তু সিবিআই দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই হুমকির উল্লেখ করা শুরু হয়েছে। কেন দেরি করে এফআইআর করা হল, উঠেছে সেই প্রশ্ন।
হুমকিই যদি কারণ হয় তাহলে পুলিশের কাছে সেই খবর নেই কেন? এখন প্রায় প্রতি গ্রামেই সিভিক ভলান্টিয়ার থাকে। গণধর্ষণের মতো ঘটনা যদি ঘটে থাকে এবং ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ দাহ করে দেওয়া হল, অথচ তার বিন্দুমাত্র খবর পুলিশের কাছে ছিল না কেন? পুলিশ তো স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করতে পারত, কেন করিনি? সেই হিসাবে পুলিশকে কেন পার্টি করা হবে না? বলা হচ্ছে প্রভাবশালী ভয় দেখানোর জন্যই নির্যাতিতার পরিবার পুলিশকে অভিযোগ জানাতে দেরি করেছেন এবং দেহ দাহ করে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন। সেক্ষেত্রে অন্যতম মূল অভিযুক্ত প্রভাকর পোদ্দারের বাবা সামান্য দিনমজুরের কাজ করেন। তিনি কতটা প্রভাব খাটাতে পারেন? যাদের উপস্থিতিতে মৃতদেহ দাহ করার কথা এফআইআরে উল্লেখ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কেন এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি সিবিআই? অবশ্য সেই সব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। সেদিন মামলার শুনানি চলাকালীন আদালত চত্বরে ভিড় করেছিলেন প্রচুর মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.