ধীমান রায়, কাটোয়া: সরকারি প্রকল্পে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ। কাটমানি ফেরতের দাবিতে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে জনরোষের মুখে পড়লেন এক তৃণমূল নেতা। রবিবার সকালে তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কয়েকশো গ্রামবাসী। চাপের মুখে শেষপর্যন্ত কাটমানি নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ওই তৃণমূল নেতা। বস্তুত, তিনি মুচলেকা দিয়েছেন যে, ২০ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেবেন।
অভিযুক্তের নাম উজ্জ্বল মণ্ডল। তিনি আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৭ বুথের তৃণমূল সভাপতি। থাকেন ওই পঞ্চায়েতেরই পান্ডুক গ্রামে। গ্রামবাসীদের দাবি, এলাকায় একশোর দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প দেখভাল করেন উজ্জ্বলই। স্রেফ একশো দিনের কাজ প্রকল্পই নয়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের কয়েক লক্ষ টাকাও আত্মসাৎ করেছেন তিনি। রবিবার সকালে কাটমানি ফেরতের দাবিতে পান্ডুক গ্রামে উজ্জ্বল মণ্ডলের বাড়ির সামনে জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামে সরকারি প্রকল্পে যাঁরা অনুদান পেয়েছিলেন, তাঁদের কারও কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা, আবার কারও থেকে ৭ হাজার টাকা নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি। এমনকী, কাউকে কাউকে ১৫ হাজার টাকাও দিতে হয়েছে। ফলে অনেকে টাকা পেয়েও বাড়ি তৈরি করতে পারেননি। শুধু তাই নয়, একশোর দিনের কাজ করেও গ্রা্মবাসীরা মজুরি পাননি বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের দাবি, ব্যাংকের কাগজে সই করিয়ে সেই টাকাও আত্মসাৎ করেছেন তৃণমূল কংগ্রসের বুথ সভাপতি উজ্জ্বল মণ্ডল। সব টাকা ফেরত দিতে হবে।
গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে কাটমানি নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি উজ্জ্বল মণ্ডলও। তাঁর সাফাই, দলের নেতাদের সম্মতিতেই সরকারি আবাসনে প্রকল্পে কাটমানি নিয়েছিলেন। ওই টাকা দলের কর্মসূচিতে খরচ করা হয়েছে, বিপদের সময়ে দলের কর্মীদের সাহায্যও করতে কাজে লেগেছে। তবে তাতে অবশ্য রেহাই মেলেনি। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে রীতিমতো মুচলেকা দিতে হয়েছে যে, তিনি ২০ দিনের মধ্যে সমস্ত টাকা ফেরত দেবেন। আর তৃণমূল কংগ্রেসের আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লক সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষের বক্তব্য, ‘আমরা দলের কর্মীদের আগেই নির্দেশ দিয়েছিলাম কাটমানি নেওয়া যাবে না। এখন উজ্জ্বল মণ্ডল যদি কাটমানি নিয়ে থাকেন, সেই দায় একান্তই তাঁর, দলের নয়।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.