সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণার ১৮ দিনের মাথায় এই প্রথম দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েই কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari)op। শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা দিবস অনুষ্ঠানে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা গেল তাঁকে। এদিন সকালে অনুষ্ঠানটি হয় লাউদোহা ব্লকের আমলোকা গ্রামে। বক্তৃতায় উন্নয়ন নিয়ে চড়া ভাষায় কেন্দ্রের সমালোচনাও করেন তিনি।
দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করায় কয়েকদিন আগে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র পাণ্ডবেশ্বর (Pandaveswar) ও লাউদোহায় জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে মিছিল করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিল দলের নেতা-কর্মীরা। পোড়ানো হয়েছিল তাঁর কুশপুত্তলিকাও। দলের সঙ্গে সমস্ত মতান্তর মিটিয়ে ১৭ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার প্রথম নিজের বিধানসভা কেন্দ্র পান্ডবেশ্বরে পা রাখেন সস্ত্রীক জিতেন্দ্রবাবু। তবে দলের কোনও অনুষ্ঠানে নয় তিনি পুজো দেন হরিপুরের রামসীতা মন্দিরে। যান লাউদোহার একটি মাজারেও। চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই শুক্রবার তাঁকে দেখা গেল দলের অনুষ্ঠানে। নিজের বিধানসভা থেকেই শুরু করলেন দলীয় কর্মসূচি। জিতেন্দ্র তিওয়ারি ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার সহ সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়, হরেরাম সিং, দলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়-সহ অন্যরা।
উন্নয়ন নিয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সুর চড়ান জিতেন্দ্র তিওয়ারি।তিনি বলেন, “২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) বলেছিলেন কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসলে পশ্চিমবাংলা ডবল লাড্ডু পাবে। অর্থাৎ বাংলার উন্নয়নে সাহায্য করবে কেন্দ্র সরকার। কিন্তু বিজেপি সরকার ছ’বছরে রাজ্যের উন্নয়নে কোন সহযোগিতা তো করেইনি বরং বাংলায় যে উন্নয়ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার করছে তা বানচাল করতে অরাজকতা সৃষ্টি করছে বিজেপি।”
তিনি আরও বলেন, “ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূলের (TMC) স্লোগান ছিল বদলা নয়, বদল চাই। দশ বছরে তৃণমূল কাউকে ঘরছাড়া কিংবা এলাকাছাড়া করেনি, উন্নয়ন নিয়ে কারো সঙ্গে বিমাতৃসুলভ সুলভ আচরণ করেনি। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের বৈশিষ্ট্য।” বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তাঁর তোপ, “ক্ষমতায় আসবে কিনা তার ঠিক নেই অথচ এখন থেকেই বিজেপির নেতারা বলছে বদল আর বদলা দুটোই নেবো। তাদের কথাতেই স্পষ্ট বিজেপি কোনদিন ক্ষমতায় এলে ধর্ম আর জাতপাত নিয়ে দাঙ্গা বাঁধিয়ে মানুষকে এলাকাছাড়া করবে। এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়। তাই নিজেদের সংস্কৃতিকে বাঁচাতে বাংলার মানুষ ফের তৃণমূলের সরকার গড়বে।” অনুষ্ঠান শেষে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ দলের আগামী কর্মসূচি নিয়ে তাঁকে আলোচনাও করতে দেখা যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.