স্টাফ রিপোর্টার: বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ফণীর সঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি ও সিপিএমের তুলনা করলেন পুরমন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বাংলায় ঢুকে ফণী শক্তি হারানোর প্রসঙ্গ টেনে পুরমন্ত্রী বললেন, “ভোটের সময় বিজেপি-সিপিএম ফণীর মতো ফণা তোলে। নানা তর্জন গর্জন করে, ভয় দেখায়, চোখ রাঙায়, কিন্তু শেষে বাংলার মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘উন্নয়ন-উত্তাপ’-এর কাছে হেরে গিয়ে তেজ ফুরিয়ে ফুস করে পালিয়ে যায়। ভোটে জয়ী হয় তৃণমূল। নির্বাচনের সময় এমন ফণীরা যতই বাংলার মানুষকে ভয় দেখাক না কেন, তাতে রাজ্যবাসীর কারো চিন্তা নেই৷ কারণ, তাঁদের পাশে রয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷’’
শনিবার সোনারপুর উত্তরের শ্রীপুর জোড়ামাঠে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর সমর্থনে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও পুরমন্ত্রী। ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী, বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম, জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আবু তাহের, সিআইসি নজরুল মণ্ডল, মিতালি বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ। বিগত লোকসভা ভোট ও ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটেও বিরোধীরা ফণীর মতো হুঙ্কার দিয়েছিল, কিন্তু শেষে শুক্রবার রাতের ঘূর্ণিঝড়ের মতোই বেলুন চুপসে গিয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন পুরমন্ত্রী। বলেন, “দিল্লি থেকে প্লেনে চেপে বাংলায় এসে একটা ঘূর্ণিঝড়ের মেজাজে মোদি অনেক হুঙ্কার দিয়েছিলেন। বাংলায় সব সিট পেয়ে যাবেন বলেছিলেন। কিন্তু শেষে ক্ষমতা হারিয়ে মাত্র দু’টো পেয়ে ফণীর মতোই মুখ লুকানোর জায়গায় খুঁজে পাননি। ২০১৬ সালের ভোটে তো সিপিএম-কংগ্রেস একসঙ্গে জোট বেঁধে ফণী হয়ে এমন ফোঁস করছিল, ছোবল দিচ্ছিল যে মনে হচ্ছিল সবাইকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু দেখা গেল, বাংলার মানুষ বিষাক্ত জোটকে প্রত্যাখ্যান করে তৃণমূলের আসন বাড়িয়ে ২১১ করে দিয়েছিল। যতদিন তৃণমূল নেত্রী বাংলায় আছেন, ততদিন রামপন্থী-বামপন্থী যে ফণীই ভোটের সময় এসে হুঙ্কার দিক না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে পড়লে সবার শক্তি শূন্য হয়ে যাবেই যাবে।” যাদবপুরের বামপ্রার্থী সম্পর্কে বর্তমান মেয়র বলেন,“যখন আয়লা এসেছিল তখন যিনি মেয়র ছিলেন তিনি রাতে নিজের বাড়িতে চুপ করে ছিলেন। আর মেয়র হিসাবে আমি শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছি। এটাই রাজধর্ম, এটাই মমতাদি শিক্ষা দিয়েছেন, দুর্যোগে বিপন্ন মানুষের পাশে থাকতে।”
বিজেপি ও সিপিএমের নেতাদের শীতের মরশুমের পরিযায়ী পাখি বলেও এদিন কটাক্ষ করেন পুরমন্ত্রী। বলেন, “ প্রতিবছর শীতে চিড়িয়াখানায় ভোটের মতই মোদি-অমিত শাহদের মতো মরশুমি পাখি আসে। কিন্তু শীত চলে গেলেই ওই সব পাখিরা চলে যায়, শুধুমাত্র সরোবরে ভাসতে থাকে একা রাজহংস। বলে দিতে হবে না, এই রাজহংস হল বাংলার প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সারাবছর তিনি মানুষের সরোবরে ঘুরে বেড়ান। ফণী-আয়লা যাই হোক না কেন, তিনি মানুষ বিপদে পড়লেই ছুটে গিয়ে পাশে দাঁড়ান।” মালেগাঁও বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞাকে বিজেপি ভোটে প্রার্থী করারও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, “জঙ্গি কাজের জন্য আলকায়দাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, আমরা এই নিষিদ্ধকরণকে সমর্থন করি। কিন্তু আরেক সন্ত্রাসবাদী সাধ্বী প্রজ্ঞাকে যারা প্রার্থী করেছে সেই বিজেপিকেও তাহলে নিষিদ্ধ করা হোক।” বালাকোটের ঘটনার উল্লেখ করে পুরমন্ত্রী বলেন, “সেনার সাফল্যকে নিজের সাফল্য বলে উল্লেখ করে ভোট চাইছেন, কিন্তু পুলওয়ামার ব্যর্থতাকে স্বীকার করছেন না। এটা চরম লজ্জার। কারণ, ভারতীয় সেনা কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। এর আগে নেহরু-ইন্দিরা গান্ধী, চিন-পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান করেছেন। কিন্তু কেউই তা দলের কাজে, ভোটের কাজে ব্যবহার করেননি। সেনার সাফল্যকে ব্যবহার করে সংবিধানের অমর্যাদা ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছেন মোদি।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.