ধীমান রায়, কাটোয়া: একশো দিনের কাজ প্রকল্পে গ্রামের লোকজন কাজ পাননি। অথচ প্রকল্পের কাজ হয়েছে দেখিয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এমনই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার ছোট মেইগাছি গ্রামে। প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা পার্থ ঘোষের বিরুদ্ধে। সালিশি সভায় দোষ স্বীকার করে মুচলেকা দিতে বাধ্য হলেন অভিযুক্ত নেতা।
কাটোয়া ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পার্থ ঘোষ। স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল মণ্ডল, অলোক ঘোষ জানান, কাটোয়া ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সিঙ্গি পঞ্চায়েতের ছোট মেইগাছি গ্রামে ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরের একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মজুরি আদপেই পাননি কোনও জব কার্ডধারী। কিন্তু সম্প্রতি লকডাউনের সময় কাটোয়া ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি অফিস থেকে ওই প্রকল্পের মজুরির টাকা তোলা হয়েছে বলে গ্রামবাসীরা জানতে পারেন। তারপরই গ্রামে এসে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা স্থানীয় নেতা পার্থ ঘোষকে জেরা শুরু করেন। গ্রামবাসীরা জানতে পারেন, ভুয়ো মাস্টাররোল করে টাকা তোলা হয়েছে। গ্রামবাসী পিন্টু ঘোষ, সন্ধ্যা মাঝির কথায়, “শুধু টাকা তোলাই নয়, নিজের পরিবারের লোকজন ও আশপাশের গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দার নাম দেখিয়ে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলে ধরা পড়েছে। আমাদের বঞ্চিত করে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে দাবি, এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পার্থ ঘোষকে চেপে ধরেন গ্রামবাসীরা। ছোট মেইগাছি গ্রামের মোড়কতলায় সালিশি সভা বসে। সভার মাঝে অভিযুক্ত পার্থ ঘোষকে হাজির করানো হয়। সালিশি সভায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা তছরুপের কথা স্বীকার করেন পার্থ ঘোষ। প্রকাশ্যে স্বীকার করে নেন, তাঁর পরিবার, শ্বশুরবাড়ি ও আত্মীয়-পরিজন মিলে ১২টি জবকার্ডে কাজের হাজিরা দেখানো হয়েছিল। পার্থ ঘোষের নিজের নামেও রয়েছে জবকার্ড। টাকা ফেরতের মুচলেকা দিলে তিনি রেহাই পান। পার্থ ঘোষ বলেন, “আমার ভুল হয়েছে”। এর বেশি মন্তব্য করতে চান না বলে জানান। এবিষয়ে কাটোয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি বিস্তারিত জানা নেই। তবে যদি টাকা তছরুপের অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে দল থেকে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.