নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ভোলবদল অনুব্রত মণ্ডলের। চব্বিশ ঘন্টা আগেই রামপুরহাটের কর্মীসভায় এলাকার বিধায়ক তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘অপদার্থ’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। শনিবার আগামী বিধানসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে আশিসবাবুরই নাম ঘোষণা করলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। ড্যামেজ কন্ট্রোলেই কী সুরবদল, রাজনৈতিক মহলে চলছে সেই গুঞ্জন।
অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “উনি এই এলাকার দীর্ঘদিনের বিধায়ক। ওঁর নাম তো করবই। রানিং এমএলএ। এখনও মন্ত্রী। উনি তো প্রার্থী হবেনই। একশোবার নাম ঘোষণা করব।” তাহলে কী সব বিধায়কই প্রার্থী হবেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে যদিও যথেষ্ট সংযত অনুব্রত। তিনি বলেন, “সে সব বিবেচনা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি আশিসদার নাম ঘোষণা করলাম।” পাশাপাশি দাবি করেন, শুক্রবারের কর্মীসভায় তিনি আশিসবাবুকে ‘অপদার্থ’ বলে কটাক্ষ করেননি। বলেছিলেন ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনকে। তাঁর কথায়, “যা বলেছি আনারুলকে বলেছি। আশিসদাকে বলেছি তুমি মন্ত্রী আছো, দেখো।” তিনি দাবি করেন, গতকালের বৈঠকের তিনটি ক্যামেরায় ছবি তোলা হয়েছে। তার কাছে থাকা ফুটেজে স্পষ্ট তিনি মন্ত্রীকে অপদার্থ বলেননি। তবে এদিনের সভায় গতকালের বিতর্কের কোনও আঁচ পড়েনি। আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল পাশাপাশি বসেছিলেন। খোশমেজাজে সভা পরিচালনা করেছেন। তবে মুখ ফসকে মন্ত্রীকে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করে অনুব্রত যে বেশ বিব্রত তা এদিন বারবার আশিসবাবুর প্রশংসায় স্পষ্ট।
শনিবার রামপুরহাটের বনহাট, বড়শাল ও দখলবাটির বুথ কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ছিল। গতকালের তেতে থাকা অনুব্রত মণ্ডলের মেজাজ এদিন ছিল ততধিক শান্ত। একের পর এক বুথ সভাপতিকে অনুব্রত মণ্ডল আশিসবাবুকে দেখিয়ে বলেন, “কেন হারলেন। লোকটা খারাপ। মানুষের কোনও উপকার করে না। আপনাদের কাছে যায় না। ভোটটা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তো দিদির ভোট। উনি দাঁড়াবেন। আপনারা ওনার হয়ে ভোটে বেরবেন তো?” এই বক্তব্যের মাঝে কোন কোন এলাকায় পুরনো কর্মীরা বসে আছেন তা জেনে নেন। তিনি নির্দেশ দেন অভিমানে কেউ যেন এলাকায় বসে না থাকে। এলাকায় এলাকায় বিরোধী দলের কেউ কর্মী-সমর্থক থাকলে তাঁকে তৃণমূলে আশিসদার হাত ধরে দলে যোগের ব্যবস্থা করান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.