ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর, শাসকদলের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ তিনি৷ বীরভূমের জেলা ছাড়াও, তৃণমূলের হয়ে একাধিক জেলার ভোট ম্যানেজারের ভূমিকায় কাজ করেছেন তিনি৷ কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল নিজের ওয়ার্ডটাই বাঁচাতে পারেননি৷ বিজেপির চোরাস্রোতে ভেসে গিয়েছে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের নিজের ওয়ার্ডই৷ কেবল অনুব্রত নয়, একই অবস্থা মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহেরও৷
[ আরও পড়ুন: দলীয় কর্মী খুন, প্রতিবাদে রানাঘাট-শিয়ালদহ শাখায় রেল অবরোধ বিজেপির ]
গোটা রাজ্যে তৃণমূলের গড়গুলির মধ্যে বীরভূম অন্যতম। চারদিকে যখন বিজেপির হাওয়া৷ তৃণমূল একের পর এক লোকসভা আসন হারছে৷ তখন একা কুম্ভের মত বীরভূম আগলে রেখেছেন অনুব্রত মণ্ডল ও চন্দ্রনাথ সিংহ। বীরভূমের দুটি লোকসভা আসন, বোলপুর ও বীরভূমে জয়লাভ করেছে তৃণমূল৷ কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হল বিজেপির কবল থেকে নিজেদের ওয়ার্ড বাঁচাতে পারেননি জেলার দুই হেভিওয়েট নেতা অনুব্রত মণ্ডল ও চন্দ্রনাথ সিংহ৷ তাঁদের নিজের ওয়ার্ডেই বিজেপির কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছে শাসকদল। বোলপুর পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টি ওয়ার্ড রয়েছে তৃণমূলের দখলে৷ একটি ওয়ার্ড রয়েছে বিজেপির৷ তৃণমূল সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটে বোলপুর পুরসভার ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফলে ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টিতে শাসকদল বিজেপির কাছে পরাজিত হয়েছে। অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে৷ সেখানকার কাউন্সিলর শিবনাথ রায়। এই ওয়ার্ডেই তৃণমূল ভোট পেয়েছে ১৬০০টি এবং বিজেপি ২১৬১টি৷ বিজেপি লিড পেয়েছে ৫৬১ ভোটে। তৃণমূলের এই খারাপ ফলে স্বভাবতই আশঙ্কিত অনুব্রত মণ্ডল৷ তিনি বলেন, ‘‘বোলপুর পুরসভাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তারপরেও কেন মানুষ ভোট দিল না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। বিজেপির বোলপুর টাউন সভাপতি সুব্রত চট্টরাজ বলেন, ‘‘বোলপুর টাউনে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি লিড পেয়েছে বিজেপি। এর কারণ তৃণমূলের দুর্নীতি ও সন্ত্রাস।’’
[ আরও পড়ুন: জিতেই আস্ফালন, খাদ্যমন্ত্রীকে গেরুয়া হাফ প্যান্ট পরিয়ে ঘোরানোর হুমকি শান্তনু ঠাকুরের ]
একই অবস্থা বোলপুরের বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের ওয়ার্ডেও। সেখানকার কাউন্সিলর তাঁর স্ত্রী কুন্তলা সিংহ। এই ওয়ার্ডে তৃনমূল ভোট পেয়েছে ১০৪৩টি, বিজেপি ১২৩৯৷ বিজেপি লিড পেয়েছে ১৯৬ ভোটে। একই ভাবে তৃণমূল হেরেছে দুবরাজপুরের বিধায়ক তথা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নরেশ বাউরির ওয়ার্ডেও। সেখানে তৃণমূল পেয়েছে ১০৭৩টি ভোট, বিজেপি ২০১৭টি৷ বিজেপি লিড পেয়েছে ৯৫৪ ভোটে। সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে কাউন্সিলর সুরজিৎ বটব্যালের ১ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে তৃণমূল পেয়েছে ৯৪৩টি ভোট এবং বিজেপি ৩২৫৭টি। বিজেপির লিড পেয়েছে ২৩১৪ ভোটে। তবে এই পরিস্থিতির মধ্যেও যে ওয়ার্ডে ভাল কাজ হয়েছে এবং কাউন্সিলর মানুষের পাশে থেকেছে, সেখানে তৃণমূল ভাল ফল করেছে। বোলপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুশান্ত ভকতের নিজের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল লিড পেয়েছে। সেখানে শাসকদলের প্রাপ্ত ভোট ৮৩৩টি ও বিজেপির ৮১১টি। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পর্ণা ঘোষ। সেখানে তৃণমূল পেয়েছে ১২২৩টি ভোট এবং বিজেপি ৯৬১টি। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ ওমর। সেখানে তৃণমূল পেয়েছে ১৫৪২টি ভোট এবং বিজেপি ১০১৪টি ভোট।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.