ছবি: প্রতীকী
শেখর চন্দ্র, আসানসোল: খারিজ জামিনের আবেদন। আবারও ১৪ দিনের জেল হেফাজতে অনুব্রত মণ্ডল। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দেন আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক। আগামী ২৫ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি। এদিকে, অনুব্রত মণ্ডলকে এবার জেলে গিয়ে জেরা করতে পারবে ইডি, সেই অনুমতি দিল আদালত।
জেল হেফাজত শেষে শুক্রবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিট নাগাদ আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয় গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mandal)। শুরু থেকেই অনুব্রতর জামিনের আরজি জানান তাঁর আইনজীবী। পাশাপাশি ভোলেব্যোম রাইস মিলের অ্যাকাউন্ট ডি ফ্রিজের আবেদনও জানানো হয়। তবে তার বিরোধিতা করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
যুক্তি হিসাবে অনুব্রতর আইনজীবী বলেন, “সিবিআইয়ের আগের দিনের আবেদনের সঙ্গে আজকের কোনও তফাৎ নেই। চার্জশিটে দাবি করা হচ্ছে অনুব্রত মণ্ডল গরু পাচারে যুক্ত। কিন্তু এখন কী তদন্ত করছে সিবিআই? যেখানে টাকা নয়ছয় হয় তার তদন্ত করে ইডি। সিবিআই, ইডি’র মতো দু’টি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একই তদন্ত আইনসঙ্গত নয়। ইতিমধ্যে ৫টি চার্জশিট হয়ে গিয়েছে। আর কী যোগসূত্র বের করবে সিবিআই? সিবিআই এখন যা করছে সেটা তাদের করার কথা নয়। সিবিআই জামিন আটকাতে অকারণে বিরোধিতা করছে। ৯২ দিন ধরে জেলে রয়েছেন আমার মক্কেল (অনুব্রত মণ্ডল)। এটা তাঁর কাছে মজার বিষয় নয়।”
অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে ওঠা অসহযোগিতা এবং প্রভাবশালী তত্ত্বেরও জোরাল বিরোধিতা করেন তাঁর আইনজীবী। তিনি বলেন, “তদন্তে অসহযোগিতা আর প্রভাবশালী তত্ত্ব আর কতদিন চালাবে সিবিআই? সাক্ষীদের কী করে প্রভাব খাটাবে অনুব্রত? কোনও কাগজ আমরা তো হাতেই পাইনি। আমার মক্কেল তো জানেই না কে সাক্ষী? আজকে সিবিআই তাঁদের পিটিশনে তৃণমূল নেতা না বলে শুধু রাজনৈতিক নেতা বলে উল্লেখ করেছে প্রভাবশালী বোঝাতে। তিনি যদি প্রভাবশালী হতেন তবে এত এত সাক্ষী কী করে পাচ্ছে সিবিআই? সারদা মামলার তদন্ত ২০১২ সাল থেকে চলছে। এখনও চার্জশিট জমা পড়ছে। দীর্ঘ তদন্ত। অনুব্রতর সঙ্গে কী তাই হবে? যেকোনও শর্তে জামিন দেওয়া হোক। তাতে যদি বীরভূমের বাইরে থাকতে হয় তো তাই হোক। গরু পাচার মামলায় মূল অভিযুক্তরা কিন্ত জামিনে মুক্ত রয়েছে।”
পালটা সিবিআইয়ের আইনজীবী কালীচরণ মিশ্র জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেন। যুক্তি হিসাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেন, মামলার সাক্ষীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ফিরহাদ হাকিমের ‘বাঘ’ মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আইনজীবী জানান, অনুব্রত যে প্রভাবশালী সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারক জামিনের আরজি খারিজ করে দেন। অনুব্রত মণ্ডলের ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
এদিকে, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে যে রক্ষাকবচ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট, এদিন সুপ্রিম কোর্ট তা প্রত্যাহাার করে নিয়েছে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের বক্তব্য, এই রক্ষাকবচ দেওয়া হয়েছিল অনুব্রত গ্রেপ্তার হওয়ার আগে। অন্য একটি মামলায় তিনি ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ফলে এই রক্ষাকবচের কোনও যৌক্তিকতা নেই। তাই তা তুলে নেওয়া হল। পাশাপাশি হাই কোর্টে এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির কথাও বলা হয়েছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.