দেবাদৃতা মণ্ডল, চুঁচুড়া: সাতসকালে ব্যান্ডেল স্টেশনে গুলিবিদ্ধ মৃত্যু হল এক তৃণমূল নেতার। তাঁর নাম দিলীপ রাম। তিনি একজন রেলকর্মী বলে জানা গিয়েছে। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির ব্যান্ডেল স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্লাটফর্মে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই তৃণমূল নেতাকে প্রথমে চুঁচুড়া হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু, কিছুদূর যাওয়ার পরেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার ১২ ঘণ্টার ব্যান্ডেল বনধের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। এই ঘটনার প্রতিবাদে জিটি রোড অবরোধ করেছে শাসকদল৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী হওয়ার পাশাপাশি এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত দিলীপবাবু। স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদারের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তাঁর। শনিবার সকালে ব্যান্ডেল স্টেশনের পাঁচ নম্বর প্লাটফর্মে ট্রেন ধরবেন বলে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেসময় কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। মাথার পিছনে গুলি লেগে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন ওই তৃণমূল নেতা। বিষয়টি দেখতে পেয়ে স্টেশনে থাকা লোকজন ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এরপরই গুরুতর জখম অবস্থায় দিলীপবাবুকে চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়া কলকাতায় রেফার করা হয়েছিল। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে শ্রীরামপুরের কাছে মৃ্ত্যু হয় তাঁর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে ব্যান্ডেল স্টেশনে এক তৃণমূল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। চুঁচুড়া হাসপাতাল থেকে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পিছনে স্থানীয় এক দুষ্কৃতী লালা-র ভাই বিরজু পাসোয়ান জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যদিও অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এই বিষয়ে এখনই কাউকে কিছু বলতে চাইছে না তারা।
এই ঘটনার খবর পেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাদের অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত আছে। ব্যান্ডেল এলাকায় তৃণমূলের সংগঠন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে দিলীপের। তাই তাঁকে বহুদিন ধরেই টার্গেট করছিল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। শনিবার সকালে ট্রেন ধরার সময় তাঁকে লক্ষ্য গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। এর জেরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার ১২ ঘণ্টার ব্যান্ডেল বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। খুনিদের গ্রেপ্তার করে কঠিন শাস্তি না দেওয়া হলে আরও বড় আন্দোলন করা হবে।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে বিজেপির তরফে। উলটে তাদের দাবি, কাটমানি ইস্যুকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্যেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল বাড়ছে। এই ঘটনাটিও ওদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.