টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের (TMC) জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ উঠল। দলেরই একাংশের দাবি, টাকার বিনিময়ে পঞ্চায়েতের টিকিট বিক্রি করছেন ব্লক সভাপতি। গ্রাম পঞ্চায়েতের টিকিটের জন্য না কি দর উঠেছে এক লক্ষ টাকা। পঞ্চায়েত সমিতির টিকিটের জন্য দর দ্বিগুণ। এমনই অভিযোগ তুলে স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে রীতিমত ধরনায় বসলেন তৃনমূলের বাঁকুড়া জেলা সহ সভাপতি। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাঁকুড়ার মেজিয়া এলাকায়। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে ব্লক সভাপতির দাবি, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। বাঁকুড়ার জেলা সভাপতির হুঁশিয়ারি, কেউ দলবিরোধী কাজ করলে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্লক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে লক্ষ-লক্ষ টাকা নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট বিক্রির অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যেই ধরনা দিলেন তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়। রবিবার সন্ধেয় মেজিয়া হাই স্কুল মোড়ে দলের স্থানীয় ও অঞ্চল স্তরের নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ধরনা অবস্থান শুরু করেন। তবে কিছুক্ষণ পরেই সেই অবস্থান বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নেন তৃণমূলের ‘বিক্ষুব্ধ’ ওই অংশ। প্রকাশ্য ধরনা মঞ্চ থেকেই তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতির অভিযোগ, মেজিয়া ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আট থেকে দশটি আসনের টিকিট বিক্রি হয়েছে। আসন পিছু এক লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট বিক্রি হয়েছে দু’লক্ষ টাকা দরে। টাকার বিনিময়ে সমাজবিরোধীদেরও টিকিট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের ওই নেতা।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জন্মেঞ্জয় বাউড়ি বলেন, “অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কিছু দুষ্কৃতী ও করে খাওয়া লোক এই বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন। এই ঘটনা দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়।” তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র বলেন, “দলের এখনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়নি। এই অবস্থায় বিক্ষোভকারীরা কীভাবে বুঝলেন কে প্রার্থী হচ্ছে? কেউ দল বিরোধী কাজ করলে তাঁর বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে।”
বাঁকুড়ার মেজিয়া এলাকায় তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন নয়। সম্প্রতি নবজোয়ার যাত্রায় জেলায়-জেলায় গিয়ে দ্বন্দ্ব ভূলে দলের সকলকে একসঙ্গে কাজ করার বার্তাও দিচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরও বাঁকুড়ার মেজিয়ায় আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবিটা। এমনই দাবি স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.