ধীমান রায়, আউশগ্রাম: দলীয় কার্যালয়ের ভিতরেই দলের কর্মীদের হাতে চূড়ান্তভাবে হেনস্তার শিকার তৃণমূল নেতা। ঘিরে ধরে অকথ্য গালিগালাজের পাশাপাশি পানীয়ের বোতল উঁচিয়ে মারতে উদ্যত হতে দেখা যায় উত্তেজিত এক কর্মীকে। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষকে হেনস্তা করার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে (ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন)।
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি রবিবার সন্ধের দিকে ঘটে আউশগ্রাম ২ ব্লকের কোটা পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর গ্রামে। রঘুনাথপুর গ্রামেই বাড়ি তৃণমূল নেতা রামকৃষ্ণ ঘোষের। নিজের গ্রামেই নিজের দলের কর্মীদের হাতে দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে শাসকদলের নেতার এভাবে হেনস্তা হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে দলের কর্মীদের হাতে হেনস্তা হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন রামকৃষ্ণ ঘোষ। তিনি বলেন,” আমাকে হেনস্তা করার কারণ কি আমি বলতে পারব না। আমি সমস্ত ঘটনা দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তবে যারা এমন করেছে ওরা সবাই নব্য তৃণমূল। আগে কেউ বিজেপি, কেউ সিপিএম করত।” রামকৃষ্ণবাবু কার্যত স্বীকার করেছেন দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরেই তাকে এভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে।
উল্লেখ্য, আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই সংঘাত চলে আসছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই এই সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। টিকিট বন্টন নিয়েও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চাপানউতোর আগেও দেখা গিয়েছিল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলের দিকে রঘুনাথপুর গ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে তুমুল গণ্ডগোল শুরু হয়। একপক্ষের লোকজন রামকৃষ্ণ ঘোষকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় দলীয় কার্যালয়ে। তারপর তাকে কার্যত আটকে রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিভিন্ন প্রসঙ্গে অভিযোগ তুলে রামকৃষ্ণ ঘোষকে হেনস্তা করা হয়। আবার হাতের কাছে থাকা বোতল উঁচিয়ে মারতে যান ব্লক তৃণমূল সভাপতিকে। আর এই ঘটনার কিছু অংশ কেউ মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করে রাখেন। তারপর রবিবার গভীর রাতেই তা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
যখন রামকৃষ্ণ ঘোষকে হেনস্তা করা হচ্ছিল তখন দেখা যায় দলীয় কার্যালয়ের চেয়ারে একদিকে বসে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সদ্য নির্বাচিত প্রার্থী শেখ সাবির হোসেন। মূলত তারই নেতৃত্বে রামকৃষ্ণ ঘোষের কাছে জবাবদিহি চান দলের কর্মীরা এমনটাই অভিযোগ। শেখ সাবির হোসেন অবশ্য বলেন, “কোনও একদিনের বিছিন্ন ঘটনা থেকে এটা ঘটেছে তা নয়, রঘুনাথপুর গ্রামের আমাদের বেশকিছু কর্মীর দীর্ঘদিন ধরেই রামকৃষ্ণ ঘোষের উপর বিভিন্ন কারণে ক্ষোভ ছিল। সব মিলে গ্রামের লোকজন তার কাছে জবাবদিহি চাইছিলেন। তা থেকেই উত্তেজনা।” তবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেল পর্যন্ত এনিয়ে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.