সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের মুখে CAA লাগু করেছে কেন্দ্র সরকার। ভোট বৈতরণী পার করতে এই সিদ্ধান্তকে মাস্টারস্ট্রোক বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। ভোটের মুখে নির্বাচনী জনসভায় ফের সিএএ ইস্যুতে সুর চড়ালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজিনগরের যুবকের ‘আত্মহত্যা’র প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিজেপিকে তোপ দাগলেন তিনি। “জুমলার ফাঁদে পা দেবেন না”, রাজ্যবাসীর কাছে অনুরোধ অভিষেকের।
শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া স্টেডিয়ামে নির্বাচনী জনসভা (2024 Lok Sabha Election) করেন অভিষেক। বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, “সিএএ আইন পাশ হল ২০১৯ সালে। আর তা লাগু হতে পাঁচ বছর সময় লেগে গেল? এটা জুমলা ছাড়া কী? সিএএ (CAA) নোটিফিকেশন যেটা হয়েছে সেটা আরও একটা জুমলা। নোটিফিকেশনের চল্লিশের মধ্যে ৩৮ পাতা ফর্ম। কোথায় যাবেন, কার কাছে ফর্ম জমা দেবেন, তা বলা নেই। সিএএ-এর কারণে অসমে ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালি এনআরসির (NRC) কবলে পড়েছেন। ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৩ বছরে তরতাজা যুবকের প্রাণ গিয়েছে। কাগজ খুঁজে পাচ্ছে না বলে আত্মহত্যা করেছেন। আপনাকে পাসপোর্ট দেখিয়ে প্রমাণ করতে হবে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান নাকি আফগানিস্তানের পাসপোর্ট আছে তা দেখাতে হবে। এটা জুমলা। আমি বলব জুমলার ফাঁদে পা দেবেন না।”
উল্লেখ্য, বুধবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের সুভাষগ্রামে মামাবাড়ি থেকে দেবাশিস সেনগুপ্তের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন দেবাশিস। বেশিরভাগ দিনই নাইট ডিউটি পড়ত। তাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কখনও মামার বাড়ি, কখনও মাসির বাড়ি বা কাকার বাড়িতে থাকতেন তিনি। তবে বেশিরভাগ সময় তিনি নেতাজিনগরের বাসিন্দা মাসি শোভা রায়ের বাড়িতেই থাকতেন। বৃহস্পতিবার সেই মাসি ও মেসোই গোটা ঘটনা জানিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর দ্বারস্থ হন। মৃতের পরিবারের দাবি, নাগরিকত্ব চলে যাওয়ার আতঙ্কে ভুগছিলেন তিনি। তার জেরে এই অঘটন। বৃহস্পতিবার নেতাজিনগর থানায় দায়ের করা অভিযোগপত্রে দেবাশিসের বাবা তপন সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, সিএএ কার্যকরের ঘোষণার পর থেকেই তাঁর ছেলে ‘মারাত্মক মানসিক চাপে’ ভুগছিলেন। প্রয়োজনীয় নথি না থাকায় দুশ্চিন্তার কথা তিনি বার বারই বলত। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
এই ঘটনায় মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনায় সরব তৃণমূল (TMC)। গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নেতাজিনগরে দেবাশিসের মাসির বাড়িতে যান রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ নাদিমুল হক, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, স্থানীয় কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী ও যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সায়নী ঘোষ। শোকাতুর তপনবাবু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। মর্মান্তিক খবর ছড়াতেই যাদবপুর কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্যও দেবাশিসের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যান। তাঁর সঙ্গে মুখোমুখি দেখা হওয়ায় সৌজন্য বিনিময় করেন যাদবপুরেরই তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.