সম্যক খান, মেদিনীপুর: মিমি-নুসরত-সায়ন্তিকা-সায়নীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য শালবনির তৃণমূল বিধায়কের (TMC MLA)। দলের শীর্ষনেতৃত্বকেও সমালোচনা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে তাঁর সেই মন্তব্য। সেই ভিডিও পৌঁছে যায় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। তারপরই তৃণমূল বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোকে (Srikanta Mahato) শোকজ করে দল। তারপরই অবশ্য সাংগঠনিক জেলার কো-অর্ডিনেটর তথা বিধায়ককে ফোন করে ক্ষমা চেয়ে নেন শ্রীকান্ত। এ প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, দলের কথা দলের অন্দরে নেতৃত্বের কাছে বলাই ভাল। মন্ত্রী-বিধায়করা দায়িত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাই কোথায় কী বলছেন, বুঝে বলা দরকার।”
শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। রাজ্যের ক্রেতাসুরক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রীও বটে। শনিবার দলের কর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া আড্ডায় বসেছিলেন তিনি। সেখানেই একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য় করেন। ভাইরাল হওয়া অডিওতে শ্রীকান্তকে বলতে শোনা যায়, “খারাপ লোককে ভাল বলছে দল। মন্ত্রীদের লোকে চোর বলছে। চোরেদের কথাই শুনছে দল। তাহলে আর আমরা কী করব? ভাল লোকেদের কথা শুনছে না। খারাপ লোকেদের কথা শুনছে দলীয় নেতৃত্ব। দুর্বৃত্ত পরায়ণদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “সায়ন্তিকা-মিমি-নুসরত-সায়নীরা এখন দলের সম্পদ। এরা দলের সম্পদ হলে তো দল করা যাবে না। পথ দেখতে হবে।” বিধায়ক পুরো বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সিদের বুঝিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। তারপরেও সেই কথা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে অডিওটি। সূত্রের খবর, সেই ভিডিও পৌঁছে গিয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এরপরই বিধায়ককে শোকজের নির্দেশ দেন অভিষেক। মেদিনীপুর এবং ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার কো অর্ডিনেটর অজিত মাইতি দলীয় প্যাডে শোকজ করা হয়। এদিন সকালে অজিত মাইতিকে ফোন করে বিধায়ক শ্রীকান্ত ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন অজিত মাইতি। এ প্রসঙ্গে শ্রীকান্ত মাহাতো জানান, “আমি দলের অনুগত সৈনিক। বিক্ষুব্ধ হওয়ার প্রশ্নই নেই। তবে দলের সব তো আমার মনের মতো হবে না। ঘরোয়া আলোচনায় সেটাই বলেছিলাম। তবে দলের কাছে একান্ত অনুরোধ আমাকে যাতে ভুল না বোঝে।”
শালবনির বিধায়কের বিরুদ্ধে দল আর কোনও পদক্ষেপ করে কিনা সেটাই এখন দেখার। শৃঙ্খলা প্রসঙ্গে কড়া অবস্থান নিয়েছে তৃণমূল। প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে নেতা-কর্মীদের। ইতিমধ্যে পছন্দসই ব্লক সভাপতি না পেলে পদত্যাগ করার হুমকি দিয়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের এক নেতা। এবার পশ্চিম মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করে কিনা সেটা দেখার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.