সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সাধারণ ভোটারদের মন পাওয়ার সেরা উপায় যে তাঁদের অভাব অভিযোগ দূর করা, সেটা খুব ভাল করে জানেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। একুশের আগে তাই এমন দুটি প্রকল্প মমতা এনেছেন, যা কিনা রীতিমতো গেম চেঞ্জার হয়ে যেতে পারে। আর সেটা অনুধাবন করতে পারছে গেরুয়া শিবিরও। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের আনা দুটি প্রকল্প নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে গেরুয়া শিবিরেও। কথা হচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ এবং ‘স্বাস্থ্যসাথী‘ প্রকল্পের। এখনও পর্যন্ত গ্রাউন্ড রিপোর্ট বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিস্কপ্রসূত এই দুটি প্রকল্পই সাফল্যের শিখরে।
‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি কাজের জটিল প্রক্রিয়া থেকে রাজ্যবাসীকে মুক্তি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর ফলে সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প একদিকে যেমন নিমেষে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছে, অন্যদিকে তেমনি কৌশলে শুরু হয়ে গিয়েছে জনসংযোগের কাজটিও। তৃণমূল (TMC) নেতারা বলছেন, ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প যে একুশের আগে মাস্টারস্ট্রোক হতে চলেছে, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত। অনেক আগেই এই প্রকল্পে উপকৃতের সংখ্যাটা কোটির গণ্ডি পেরিয়েছে। ‘দুয়ারে সরকারে’র প্রতিটি পর্যায়ে সরকারি শিবিরগুলির সামনে সাধারণ মানুষের লম্বা লাইন নজরে পড়েছে। যা বড় বড় রাজনৈতিক সমাবেশকেও হার মানাবে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই কর্মসূচির ফলে যেভাবে সরকারি প্রকল্পের সুফলগুলি সাধারণ ভোটাররা হাতেনাতে দেখতে পাচ্ছেন, ভোটে তৃণমূল তার সুফল পেতে বাধ্য। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই প্রকল্পের ফলে সরকারি কাজের সুবিধা পেতে কোনও জনপ্রতিনিধির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হচ্ছে না সাধারণ মানুষকে। ফলে দুর্নীতির প্রশ্নই উঠেছে না। যা সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা আরও বাড়িয়েছে। ‘দুয়ারে সরকার’ যে ভোটের মুখে তৃণমূলকে মানুষের দুয়ারে পৌঁছে যেতে সাহায্য করছে, তা মেনে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারাও। প্রকাশ্যে এই প্রকল্পকে ততটা পাত্তা দিতে না চাইলেও দলের অন্দরে এ নিয়ে অনেক নেতা চিন্তা ব্যক্ত করেছেন বলেই সূত্রের খবর।
ভোটের আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আরও একটা মাস্টারস্ট্রোক ‘স্বাস্থ্যসাথী’ (Swasthya Sathi) প্রকল্প। রাজ্যের প্রতিটি পরিবারকে স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনার এই প্রকল্প যে অভাবনীয় সাড়া ফেলেছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লাইনে দাঁড়িয়ে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করিয়েছেন। যা প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়িয়েছে। আরও তাৎপর্যপূর্ণ হল ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বহু মানুষের এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার খবরও প্রকাশ্যে আসছে। যা সাধারণ মানুষের মনে সরকারের প্রতি আস্থা বাড়াবে। তৃণমূল নেতারা বলছেন, রাজ্যে এখন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অন্ন, বাসস্থান সব পরিষেবাই কার্যত বিনামূল্যে পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাই মানুষের আশীর্বাদ মমতার দিকেই থাকবে।
‘স্বাস্থ্যসাথী’ এবং ‘দুয়ারে সরকার’ এই দুই প্রকল্পের এই সাফল্য রীতিমতো দিশেহারা করে দিয়েছে বিজেপি শিবিরকে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, সরাসরি এই প্রকল্পের বিরোধিতা না করতে পেরে অপপ্রচারে নেমেছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আসলেই ‘দুয়ারে সরকার’ এবং ‘স্বাস্থ্যসাথী’র সাফল্যে বিভ্রান্ত বিরোধী শিবির। তাঁদের এই অপপ্রচারের বহর তারই প্রমাণ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সরকারের এই দুই কর্মসূচি গ্রাম বাংলার ভোটচিত্র আমূল বদলে দিতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.